শনিবার (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৮টায়, ধানমণ্ডি-৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সকাল ৯:৪৫ টায়, বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণিসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া মাহফিল এবং দুপুর ২টায়, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন থেকে ধানমণ্ডি-৩২ নম্বর পর্যন্ত আনন্দ র্যালী ও উন্নয়ন শোভা যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আনন্দ র্যালী ও উন্নয়ন শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য জননেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক। সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সঞ্চালনা করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে আসার পর যুবলীগ ভ্যানগার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, পঁচাত্তরের ঘাতকেরা, ২০০৪ সালের ঘাতকেরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র সৃষ্টি করছে যুবলীগের এই কাফেলা সেই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি বলেন, মণি ভাই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা। মণি ভাই বেঁচে থাকলে হয়তো বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যেত। তিনি আরও বলেন, আজকে যারা গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে? তাদের কি গণতন্ত্র? মার্শাল ল গণতন্ত্র। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে কি গণতন্ত্র কায়েম করেছিল জিয়াউর রহমান? যেখানে আইনের শাসন ছিল না। তিনি বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে, রাজনৈতিক আদর্শকে শক্তিশালী করতে হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, যারা মানবাধিকার বিশ্বাস করে না, যারা আইনের শাসন মানে না তারা কত ভয়ংকর তা আমরা ২৮ তারিখে দেখেছি। তিনি যুবলীগের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা সতর্ক হন, এখনও ষড়যন্ত্র চলছে, একেক সময় একেক অবরোধ দেয়। এখনও আগের অবরোধ তোলে নাই। যুবলীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। তাই সব ষড়যন্ত্রকারীকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে যুবলীগ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এই দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র দূর করা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ, বেকারত্বের অভিশাপ থেকে যুবসমাজকে মুক্ত করানোর লক্ষ্যে, যুবসমাজকে সঠিক ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই সংগঠনকে সৃষ্টি করার জন্য শেখ ফজলুল হক মণিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নির্দেশে যুবলীগ নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি যুবলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, লড়াইকে আরো শাণিত করতে হবে। লড়াইকে আরো তীব্র করতে হবে। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের পাহাড়াদার। আমরা শান্তির প্রতিষ্ঠান, আমরা শান্তির পাহাড়াদার। আমরা এদেশে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার পাহাড়াদার।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, আজকে যখন বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে এদেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা সমূহ পূরণ হচ্ছে, যখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে যুগান্তকারী অগ্রগতি সাধণ হচ্ছে, যখন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, যখ ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের স্বপ্ন যুবসমাজ দেখছে, যখন জঙ্গিবাদ প্রায় নির্মূল হয়ে এই অঞ্চল নিরাপত্তার দূর্গ স্থাপন হচ্ছে, যখন সামাজিক নিরাপত্তার বলয় স্থাপন হয়ে নারীর নিরাপত্তা অর্জন হচ্ছে এবং যখন মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে এই প্রথম বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করছে ঠিক তখন বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক শত্রু, এই দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করতে সন্ত্রাসী চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে। ওরা যখন এদেশের সাধারণ নিরীহ মানুষের জান-মালের ক্ষতি সাধণ করে আমরা তখন বসে থাকতে পারি না। ওরা যখন আমাদের সেই পুলিশ ভাইদের হত্যা করে যারা জঙ্গিবাদ নির্মূলে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে, আমরা তখন ঘরে বসে থাকতে পারি না আমাদের প্রতিবাদ করতেই হবে। বিএনপি-জামাত চায় নির্বাচন বানচাল করতে, বিএনপি চায় অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় বসাতে। অপরদিকে, আমাদের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা।
তিনি আরও বলেন, আজকের যুবলীগ দারিদ্রমুক্ত দেশ গঠনে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ওয়াদার সাথে সম্পূর্ণভাবে একাত্মতা প্রকাশ করে। আমরা প্রতিনিয়তই আমাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়নে দারিদ্র বিমোচন এবং সেবামূলক রাজনীতিকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছি। এই যুবলীগের নেতাকর্মীরা অবগত আছে যে, “ভোগের রাজনীতির নয়, বরঞ্চ ত্যাগের রাজনীতিতে” আত্মনিয়োগ করতে হবে। যুবলীগ শোষিত-বঞ্চিতদের পক্ষে সর্বদা থাকবে। নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে যুবলীগ সোচ্চার থাকবে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা মানুষ মারার জন্য মাঠে নেমেছে। এই সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার জন্য আজ সারা বাংলাদেশে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।