বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধিনেই হবে। কোন পরাশক্তি নেই নির্বাচন প্রতিহত করতে পারে। আগামি দুই সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের তফশিল ঘোষনা করা হবে।
আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি’র খুলনায় জনসভা সফল করার লক্ষ্যে আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের একটি রিসোর্ট সেন্টারে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত যৌথ মতবিনিময় সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম উপরোক্ত কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে আরও বলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ঠ তাদের জন্মদাতা শামরিক শাসক খুনি জিয়া, মুস্তাক গংরা বঙ্গবন্ধুকে ও তার পরিবারকে নিশংস ভাবে হত্যা করেছিল। জেল খানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে শামরিক শাসন, শৈরাশাসন,কারফিউ গনতন্ত্রের নামে বাংলাদেশকে পাকিস্থান বানানোর যে সড়যন্ত্র ছিল, সেই গোষ্টি এখন বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ,গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিশ্বাস করে না। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে এ দেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর সড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের মানুষ মাথা উচু করে দাঁড়াক এটা তারা চায়না।
আলোচনা সভায় উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন প্রধান অতিথি বাহাউদ্দিন নাছিম ২০১৩ সালের জামায়াত-বিএনপি’র সহিংসতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ১ অক্টোবর সরকার গঠন করে যে সহিংসতা চালিয়েছিল তার স্বীকার বাংলাদেশের মধ্যে দক্ষিন-পশ্চিমের খুলনা বিভাগের অন্যতম জেলা সাতক্ষীরা। আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মীদের দেখতে এখানে আসলে সেই সন্ত্রাসী গোষ্টি,সাম্প্রদায়িক গোষ্টি তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষায় শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল।
প্রধান অতিথি বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বাংলাদেশ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন বিশ্ব আলোচনায়, বিশ্বের রোলমডেল ঠিক তখনই বিরোধীরা সমাবেশে করতে ব্যর্থ হয়ে হরতাল অবরোধের নামে আবার অগ্নি সন্ত্রাস আর মানুষ পুড়িয়ে মারা শুরু করেছে। সে জন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাজপথে থাকতে হবে। খুনি-দুর্নীতিবাজ লুটপাটকারী ওই বিএনপি-জায়ামাতের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে, যে হাত দিয়ে বোমা মেরে বিএনপি মানুষ হত্যা করবে, গাড়িতে আগুন দিবে, সেই হাত ভেঙ্গে দিতে হবে। কোন ভাবেই স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে দেশকে ছেড়ে দেয়া যাবে না। আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রক্ষমতায় রাখতে হবে। তিনি বলেন আগামি ১৩ নভেম্বরের খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানের আওয়ামী লীগের সমাবেশ জনসুমুদ্রে পরিনত করতে হবে। সমাবেশকে সফল করতে সকলে মিলে মিশে ঐক্যবদ্ব ভাবে কাজ করতে হবে।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা একে ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলী সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক তুখড় ছাত্রনেতা এস.এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দৈনিক ভোরের পাতা ও দ্য পিপলস টাইমের সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতাজা হাসান, সিআইপি, সাধারণ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদ ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, আশাশুড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ বি এম মুস্তাকিম সহ জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কোন রক্ত চক্ষুকে ভয় পায় না। যথা সময়ে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তারেক জিয়া একজন খুনি, অস্ত্র ব্যবসায়ী। লন্ডনে বসে আছে, মুসলিকা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। সেখান থেকে মদদ দিয়ে দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে। ২০১৪ সালে গান পাওডার দিয়ে ওই বিএনপি-জামায়াত মানুষ হত্যা করেছিল। এখন হরতাল অবরোধের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারছে, পুলিশ হত্যা করছে। প্রধান বিচার পতির বাসভবনে আগুন সন্ত্রাস করছে। এটি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রাজপথে থেকে প্রতিহত করতে হবে। সন্ত্রাসীরা, জঙ্গিরা গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করবে, পুলিশ হত্যা করবে, সাংবাদিক নির্যাতন করবে তা হতে দেওয়া যাবে না। আগুন দিয়ে জালাও পোড়াও করলে বিএনপি নেতাদের বাড়ী থেকে ধরে এনে সেই হাতে আগুন ধরিয়ে দিতে হবে। জনতার আদালতে বিচার করতে হবে। আগামি ১৩ তারিখের খুলনার জনসভা হবে নৌকা বিজয়ের মহাসমাবেশ। সেই সভা থেকে নৌকা বিজয়ের জন্য শপথ নিয়ে বাড়ী ফিরতে হবে।
সভায় সাতক্ষীরা থেকে লক্ষাধিক মানুষ খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন। ইতিমধ্যে প্রতিদিন সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সাংগঠনিক ভাবে প্রস্তুতি সভা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে নেতাকর্মীরা।