শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
লোক সংস্কৃতির অন্যতম ধারক `পালতোলা নৌকা` বিলুপ্তপ্রায়
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩, ৭:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

নদীমাতৃক বাংলাদেশে একসময় নৌকায় ছিল আদি বাহন। বর্তমানে যান্ত্রিক সভ্যতার অতলে বিলীন হয়ে গেছে আবহমান গ্রাম বাংলার মনমুগ্ধকর সেই সব চিত্র কল্প। হাতেগোনা দু-একটা পালের নাও বাদামী নাও চোখে পড়লো নৌকায় আগের মত আর মানুষ ওঠে না। নতুন বধু শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য পালতলা নৌকার বায়না আর ধরে না। রংবেরঙের পাল খাটিয়ে  পণ্যের পসরা সাজিয়ে ভাটিয়ালির সুরের তালে তালে ভেসে বেড়ানো সওদাগরী বহর আর দেখা যায় না। শুধু জীবন্ত হয়ে আছে বাঙালি সংস্কৃতির এই অমূল্য সম্পদ। সে সময় পালতোলা নৌকার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে আসতো।  ভাটিয়ালি গানের সুর শুনে মনের তৃপ্ত এনে দিত। এক সময় পালতোলা  নৌকায় ছিল যানজটনের প্রধান মাধ্যম।  বিভিন্ন ধরনের  ব্যবহার ছিল ডিঙ্গি নৌকা মালাই নৌক  যাত্রীবাহী গয়না।  কবি সাহিত্যিকরা পালের নাউকে উপজীব্য করে  যুগে যুগে রচনা  করেছেন  অমূল্য সৃষ্টি কবিতা গল্প  ছড়া গান পালা ইত্যাদি। 
 
নদীবেষ্টিত জেলা  কুড়িগ্রামের  মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ ছিল গ্রাম বাংলার  ঔতিহ্যবাহী দৃষ্টিনন্দন পাল তোলা নৌকা। যেখানে এক থেকে দেড় যুগে আগেও ধরলা নদীর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে সারি সারি নৌকা।  যাতায়তের পাশাপাশি এ সব পাল তোলা নৌকায় করে জেলেরা নদীতে মাছ শিকার কাজে ব্যবহৃত করত। যেন এক সৌন্দুর্যের দৃষ্টিনন্দন স্বর্গরাজ্য। কালের পরিক্রমায় এসব পাল তোলা নৌকা এখন অতীত। এখন আর দেখা যায় না সেই পাল তোলা  নৌকা। এক দিকে জৌলুশ হারিয়ে নদ-নদীর অবস্থা এখন করুণ হচ্ছে।  কিছু কিছু নদীতে পানি থাকায় হাতে গোনা দু-একটা সেই চিরচেনা নেই দৃষ্টিনন্দন পালতোলা নৌকা চোখে পড়লেও পানি কমার সাথে সাথে আর চোখে পড়বে না বলে জানিয়েছেন নৌকার মাঝি মজিবর রহমান। সম্প্রতি ফুলবাড়ী উপজেলার সোনাইকাজী এলাকায় শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর উত্তর পাড়ে মজিবর রহমান গরু-ছাগল নিতে স্ত্রী ও স্বজনদের নিয়ে পালতোলা নৌকায় ধরলা নদী পাড়ি দিয়ে চরাঞ্চলে যাচ্ছেন। মুলত তিনি বাড়ীর গৃহপালিত গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়া আসা করতেন এবং চরাঞ্চলে গরু-ছাগলের খাবার ঘাঁস সংগ্রহ কাজে ব্যবহৃত হতো। পাশাপাশি নৌকার ধরলা সেতু দেখতে আসা কিছু দর্শনার্থী মাঝে মধ্যে সখ করে তার পালতোলা নৌকায় ধরলা নদীতে নৌকার ভ্রমণ শেষে কেউ ৫০ টাকা আবার কেউ ১০০ টাকা করে দেন।  

তিনি আরও জানান  যখন ধরলায় সেতু হয়নি তখন ধরলা নদীতে বিভিন্ন স্থানে তিন-চারটি ছোট ছোট ঘাট ছিল। সে সময় ঘাটেও সারি সারি পালতোলা নৌকা বাঁধা থাক লে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা ঘাট দখল করে নিয়েছে। সময় বেশি লাগায় পালতোলা নৌকা ব্যবহার হতো কম।  এখন গ্রামবাংলার দৃষ্টিনন্দন পাল তোলা নৌকা যেন শুধুই স্মৃতি। 

ধরলা পাড়ের ইউপি সদস্য সুমন স্মৃতিচারণ করে বললেন, আগে ধরলার পাড়ে পালতোলা নৌকায় মানুষ পাড়াপাড় করতেন। সেই সাথে ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীতে জেলেরা পালতোলা নৌকায় করে মাছ ধরতেন। এখন সেই দৃশ্য  আর দেখা যায় না।

বড়ভিটা  ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, শৈশব থেকেই নদী আর নৌকা আমাদের বাঙালীর প্রতিটি মানুষের অস্তিত্বে মিশে ছিল। এক সময় সেই সব নৌকাই ছিল মানুষজনের যাতায়াত ও পরিবহনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। হারিয়ে যাওয়া গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিনন্দন পালতোলা নৌকায় নদীভ্রমণে তৃপ্ত হতো আমাদের মন। সারি সারি নৌকার ছন্দোবদ্ধ চলা আর বাতাসে পাল ওড়ার মনোরম দৃশ্য দেখে মানুষের মনপ্রাণ ভরে যেত। কিন্তু সেই চিরচেনা দৃশ্যটি এখন বিলুপ্তীর পথে। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]