প্রকাশ: সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩, ৯:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নাটোরের গুরুদাসপুরে নন্দকুঁজা নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আব্দুর রহিম ও ইউপি সদস্য মো. আলমের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বালু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম উপজেলার নাজিরপুুর ইউনিয়নের কুমারখালি গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং মো. আলম ওই ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তারা নাজিরপুরের ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ভাইয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর হাট এলাকায় নন্দকুঁজা নদীর ভিতরে ড্রেজার মেসিন বসিয়ে বালুর ব্যবসা করছেন। এতে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ও চেয়ারম্যানের ভাই নজরুল ইসলামের নাম ব্যবহার করে প্রায় পনের দিন ধরে নন্দকুঁজা নদী থেকে বালু উত্তোলণ করছেন রহিম ও আলম। নাজিরপুর বাঁশ হাটের উত্তর অংশে নদী থেকে বালু উত্তোলণ করে আনোয়ার হোসেন ক্লিনিকের ভেতর রাখা হচ্ছে। আব্দুর রহিম দীর্ঘদিনের পুরনো বালু ব্যবসায়ী। প্রতি বছরই রহিম নন্দকুঁজা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলণ করে ব্যবসা করেন। এবছর এই ব্যবসায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলমকে যুক্ত করা হয়েছে। বালু উত্তোলণের কাজে চারজন শ্রমিক নিয়োগ করেছেন। ওই শ্রমিকদের দিয়ে বালু উত্তোলন, সংরক্ষণ ও বিক্রি করানো হচ্ছে। তাদের এই অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলণ অব্যাহত থাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলণ অবৈধ। বালু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বালু উত্তোলণের জন্য তার কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সহযোগীতা করেননি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে নাজিরপুর হাটের পূর্বপাশের বাঁশহাট সংলগ্ন নন্দকুঁজা নদীতে ড্রেজার বসানো হয়েছে। ড্রেজার থেকে উত্তোলিত বালু পাইপের মাধ্যমে আনোয়ার হোসেন ক্লিনিকের ফাঁকা স্থানে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সেখান থেকেই বালু বিক্রি করা হচ্ছে।
বিএডিসির প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান বলেন, নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলণের ফলে অদূর ভবিষতে নদী ভাঙ্গন, নাব্যতা সংকটসহ নানামুখি প্রকৃতিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বালু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বালু উত্তোলণের কথা স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসার বালু বিক্রির জন্য নদী থেকে বালু ইত্তোলন করা হচ্ছে। মূলত আইয়ুব চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যানের ভাই নজরুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য মো. আলম তার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন। বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার মেশিনটি আমার। সব ঠিক রেখেই তারা বালু উত্তোলণ করছেন।
ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, মূলত ৭ টাকা সেপ্টি দরে একটি হাফিজিয়া মাদদ্রাসায় বালু বিক্রির কথা বলে আব্দুর রহিম নদীতে ড্রেজার বসিয়েছেন। রহিমের সঙ্গে বালু উত্তোলন বা ব্যবসায় তিনি যুক্ত নন।
গুরুদাসপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান শাকিল বলেন, গত শুক্রবার অভিযান দিয়ে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত পাইপ জব্দ করা হয়েছে। পরে আবার বালু উত্তোলন শুরু করেছে জানলে আবার অভিযান চালানো হবে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, বালু উত্তোলণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। আইন না মানলে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।