প্রকাশ: শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৩, ১২:৩৭ এএম | অনলাইন সংস্করণ
মালয়েশিয়ার রাজ পরিবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য জহরের প্রভাবশালী সুলতান ইব্রাহিম সুলতান ইস্কান্দারকে পরবর্তী রাজা হিসেবে নির্বাচন করেছে।
মালয়েশিয়ায় রাজা মূলত আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করেন, কিন্তু দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলায় সম্প্রতি রাজতন্ত্রের প্রভাব বাড়ছে। ক্ষমতাসীন রাজা তার বিবেচনামূলক ক্ষমতা ব্যবহার করতে প্ররোচিত হচ্ছেন। দেশটিতে রাজার এ ধরনের ক্ষমতা ব্যবহারের ঘটনা বিরল।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ। রাজা দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান। দেশটিতে নয়টি রাজ পরিবার আছে। এই পরিবারগুলোর প্রধানরা পর্যায়ক্রমে পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য দেশটির রাজা নির্বাচিত হন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে দেশটির শাসকদের সিলমোহর রক্ষাকারী জানিয়েছেন, সুলতান ইব্রাহিম আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি বর্তমান রাজা আল সুলতান আব্দুল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
সুলতান ইব্রাহিম মালয়েশিয়ার অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী শাসকদের মতো নন। তিনি রাজনীতি নিয়ে তার মনোভাব খোলাখুলি প্রকাশ করেন। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রিয়েল এস্টেট থেকে শুরু করে খনি পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুলতান ইব্রাহিমের ব্যবসায়ীক স্বার্থ আছে। তার সংগ্রহে বহু বিলাসবহুল গাড়ি ও মোটরসাইকেল আছে।
বর্তমান রাজা আল সুলতান মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে অস্বাভাবিক সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। দেশটির শেষ তিন প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
মালয়েশিয়ার ফেডারেল সংবিধান রাজাকে অল্প কিছু বিবেচনামূলক ক্ষমতা দিয়েছে। রাজাকে মূলত প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার পরামর্শ মতো চলতে হয়।
মালয়েশিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া হয়। তবে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে এমন কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার ক্ষমতা আছে রাজার। কিন্তু ২০২০ সালের আগে এ ক্ষমতা কখনোই ব্যবহার করা হয়নি।
মালয়েশিয়া স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা দেশটির ক্ষমতায় ছিল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও)। কিন্তু ওই বছর দলটি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর মালয়েশিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এ অস্থিরতা প্রলম্বিত হতে শুরু করলে রাজা আল সুলতান এই ক্ষমতা ব্যবহার করতে শুরু করেন।
রাজার দণ্ডিত ব্যক্তিদের ক্ষমা করার ক্ষমতাও আছে। আল সুলতানের পূর্বসূরী পঞ্চম সুলতান মুহম্মদ সমকামিতা ও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আনোয়ার ইব্রাহিমকে ক্ষমা করেছিলেন। অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি আনোয়ারের।