বিএনপিকে আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি বলে আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে বলেই বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা রাজধানীসহ কোথাও সুবিধা করতে পারছে না। তাই তারা চোরাগুপ্তা হামলা করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি এখন সর্বহারা পার্টির দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে নানক বলেন, আগের দিনে সর্বহারা পার্টি, কিছু আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি এই চোরাগুপ্তা হামলাগুলো চালাতো। বিএনপিও এখন সে দিকে যাচ্ছে। বিএনপি এখন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গেছে। হারিয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে। তাদের হারিয়ে যেতেই হবে।
এসময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, সাপকে বিশ্বাস করা যায় কিন্তু বিএনপি-জামায়াতকে বিশ্বাস করা যায় না। কারণ ফখরুল বলেছিলেন- তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে। দেশের মানুষ সাক্ষী রয়েছে- গত ২৮ অক্টোবর তারা কি পৈশাচিকভাবে পুলিশ, দায়িত্বরত সাংবাদিক এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গায়েও হামলা চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিএনপির সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গাড়িতে আগুন দিয়েছে।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আসলে ‘ইল্লত (ময়লা) যায় না দইলে (ধুইলে), খাইসলত (অভ্যাস) যায় না মইলে (মরলে)’। সেদিন আওয়ামী লীগের শান্তির সমাবেশে পাঁচ লক্ষ নেতা কর্মী উপস্থিত ছিল। তারা যদি একটা চিৎকার দিয়ে বিএনপির সমাবেশের দিকে রওনা হতো তাহলে সেদিন ঢাকা শহর রণক্ষেত্র পরিণত হতো। কিন্তু নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ ছিলেন সেজন্য ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের আগুন সন্ত্রাসীদের গুলশানের একটি প্রাইভেস্টার হোটেল থেকে গ্রেফতার করেছে। শুধু তাই নয়, উন্নত মানের হাসপাতাল গুলোতে বিএনপির অনেক পলাতক নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে কারা রয়েছে? কি জন্য রয়েছে তা খবর নিতে হবে। বিএনপি'র যে সকল সন্ত্রাসীরা যেখানেই পালিয়ে আছে পুলিশকে খবর দিয়ে তাদেরকে ধরিয়ে দিতে হবে।
বিএনপির গণতন্ত্রের ভাষা ওরা বুঝে না উল্লেখ করে নানক বলেন, গণতন্ত্র ভেদ করে বিএনপি দেশে অগণতান্ত্রিক একটি সরকার কায়েম করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ ও আমাদের সেনাপতি শেখ হাসিনাকে কোন আন্তর্জাতিক মোড়লের বাঁকা চোখ দেখিয়ে লাভ নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগুলো পরোয়া করে না।
এসময় আগামী নির্বাচন পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, আগামী ৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জনসভায় ১০ লক্ষ লোক জমায়েত করতেই হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে জনসভায় হাজির হতে হবে।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, বিএনপি জামায়াতকে কোথাও সুযোগ দেওয়া যাবে না। নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী মাঠে শান্তিপূর্ণ অবস্থান থাকতে হবে। তারা যাই করুক না কেন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবে। আসন্ন নির্বাচন সামনে তাই নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তিশালী করতে হবে।
মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচিসহ মহানগরের নেতারা। এই সময় নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, দলীয় নেতাকর্মী এবং কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।