মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে আলু-পিয়াজের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৌসুমী সব শাক-সবজির দাম। সরকার নির্ধারিত দামে আলুর কেজি ৩৬ ও পিয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রির ঘোষনা থাকলেও এই দামে কোথাও এসব পণ্য মিলছেনা। বরং খোলা বাজারে দিনদিন সবজির বাজার উর্ধগতির দিকে যাচ্ছে। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে সরকার নির্ধারিত দরে আলু বিক্রির ট্রাকশেল কার্যক্রম চালু করা হয়। শ্রীনগর বাজার সংলগ্ন পোস্ট অফিসের সামনে ট্রাকশেলে ৩৬ টাকা কেজি দরে কিছুদিন আলু বিক্রি করা হয়। গড়ে প্রতিদিন ৩০ মণ আলু বিক্রি করা কথা থাকলেও কার্যক্রমটি চোখে পরছেনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহসিনা জাহান তোরণ এ ব্যাপারে জানান, ট্রাকশেল কার্যক্রমটি আপাতত বন্ধ আছে। উপজেলায় ৬৭৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এচাষে সরকারিভাবে কোন প্রণোদনা আসেনা। তবে সবজি চাষে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হয়।
সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, বর্তমান সবজির খোলা বাজারে একমাত্র দাম কম কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া অন্য সব ধরনের সবজির দাম আকাশচুম্বি। সোমবার আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, দেশী পিয়াজ ১৪০ টাকা, বিদেশী পিয়াজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকার ওপরে। এছাড়া আগাম শিমের কেজি ১৬০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা, ঢেঁরস, করলা ১০০, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, আগাম ফুলকপির টিস ৫০-৮০ টাকা, বেগুন প্রকার ভেদে ৭০-১২০ টাকা, লাউয়ের পিস সর্বনি¤œ ৮০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচির কেজি ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া নিত্য খাদ্য পণ্যের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূল্য বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ পক্ষে এসব পণ্য ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে নি¤œআয়ের কর্মজীবি পরিবারগুলো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। পরিবারের সন্তানদের চাহিদা অনুযায়ী দেহের খাদ্য পুষ্টির যোগান দিতে পারছেন না।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শ্রীনগর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার কিংবা সড়কের মোড়ে সবজির দোকানে প্রচুর পরিমানে মৌসুমী শাক-সবজির আমদানী রয়েছে। অথচ অকাশচুম্বি দামে অনেকেই পছন্দের সবজি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কয়েকজন ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ ৭০ টাকায় আলু নিতে হলো। দোকানীরা মিশরের পিয়াজের কেজি প্রকার ভেদে দাম চাইছে ১১০ টাকার ওপরে। কোন সবজিই ৭০-৮০ টাকার নিচে নেই। শ্রীনগর বাজারে সুজন নামে এক ক্রেতা বলেন, এসেছি লাল শাক কিনতে। কিন্তু ৩০ টাকায় ছোট লাল শাকের আটির নিতে হলো। ৩দিন আগেও এই শাকের আটি ১৫ টাকায় নিয়েছি। নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলে সংসার চালাতে পারছিনা। পরিবারের সব চাহিদা পূরণ করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
ডাকবাংলোর সামনে শাক বিক্রেতা মো. কাজল বলেন, গেল টানা বৃষ্টিতে তার শাক-সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে উৎপাদণ কম হয়েছে। তার জমিতে উৎপাদিত লাল শাক, সবুজ শাক, লাউ শাক, মুলা শাকসহ অন্যান্য আগাম সবজি খোলা বাজারের তুলনায় কিছুটা কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবী তার।
মজনু ভান্ডারি, নিজাম বেপারী, আসরফ মিয়াসহ শ্রীনগর বাজারের সবজি বিক্রেতারা জানান, সবজির পাইকারী বাজারে দাম বাড়ায় আমাদের বেশী দামে আনতে হচ্ছে। কিছুদিন পরে শীতকালীন সবজির আমদানী বাড়লে সব শাক-সবজির দাম কমবে বলেন স্থানীয় দোকানীরা আশা করছেন।