এবার জরিমানার মুখে পড়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিচারকের নিয়ে মন্তব্য করায় তাকে ১০ হাজার ডলার জরিমানা করেছেন নিউইয়র্কের বিচারক আর্থার অ্যাঙ্গরন। খবর বিবিসির।
বুধবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, তার সাথে বিচারক ও পাশে বসা লোকটি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। বিষয়টিকে বিচার চলাকালে আদালতের কর্মচারীদের নিয়ে মন্তব্য করায় বিচারক ‘গ্যাগ আদেশের’ (কোনো বিষয়ে তথ্য প্রকাশ না করার নির্দেশ) লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল ট্রাম্পের এ মামলার শুনানি নির্ধারিত ছিল না। তবে শুনানির সময় বিচারক তাকে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় তাকে বিচারক নিজের মন্তব্যের ব্যাখা দিতে বলেন। ট্রাম্প বিচারককে খুবই পক্ষপাতদুষ্ট লোক বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তার পাশে বসা লোকটা (ক্লার্ক) সম্ভবত তার চেয়েও বেশি পক্ষপাতদুষ্ট। যদিও ট্রাম্পের দাবি, তিনি এ মন্তব্যের মাধ্যমে তার সাবেক আইনজীবী কোহেনকে উদ্দেশ্য করেছেন। কোহেন তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগেও ট্রাম্পকে গ্যাগ অর্ডার বা কোনো বিষয়ে তথ্য প্রকাশ না করার নির্দেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য তাকে ৫ হাজার ডলার (সাড়ে ৫ লাখ টাকা) জরিমানা করেন বিচারক। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এমন আচরণ করলে তাকে জেলে পাঠানোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
রায়ে বিচারক আগামী ১০ দিনের মধ্যে নিউইয়র্ক লয়ার্স ফান্ড ফর ক্লায়েন্ট প্রটেকশনে এ অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো ভুল করবেন না। ভবিষ্যতে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছায় আইন লঙ্ঘন করলে আরও কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। আর তা হলো জেল।
উল্লেখ্য, সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পদের মূল বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এ মামলাটি নিউইয়র্কের বিচারক আর্থার অ্যাঙ্গরনের আদালতে চলমান রয়েছে। ট্রাম্পের এ মামলাটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আনা হয়েছিল। ওই মামলায় স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস তাকেসহ তার ছেলে ও ট্রাম্প অরগানাইজেশনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পত্তির মূল্য বাড়ানোর অভিযোগ করেন।
মামলায় জেমস ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২৫০ মিলিয় ডলার জরিমানার আবেদন করেন। এ ছাড়া তিনি ও তার ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়রের বিভিন্ন ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানান। এ ছাড়া পাঁচ বছরের জন্য তার রিয়েল স্টেট ব্যবসা ও ট্রাম্প অরগানাইজেশনের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়, ব্যাংকে এবং বিমা সংস্থাকে ট্রাম্প নিজের সম্পত্তির যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে তার মূল্য অন্তত দুই দশমিক দুই তিন বিলিয়ন ডলার বেশি দেখানো হয়েছে। লোন পেতে সুবিধা হবে বলেই এভাবে নিজের সম্পত্তির মূল্য বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ট্রাম্প, যা বেআইনি।
তবে অভিযোগের বিষয়ে ট্রাম্পসহ অন্য আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। তারা কখনো জালিয়াতির আশ্রয় নেননি বলে আদালতে জানিয়েছেন। তাদের দাবি, তাদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড আসলেই লাভজনক ছিল।
ভোরেরপাতা/এফ