প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩, ৯:২২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার শেষ হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এক দিকে আনন্দ অন্যদিকে বিষাদের সুর আর চোখের জলে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন। শেষমুহুর্তে হিন্দু সম্প্রদায়ের অসংখ্য লোকজন দেবীকে বিদায় জানাতে মন্ডপে মন্ডপে ভীড় করতে থাকে এবং তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষ করে। অনেকেই দেবী দুর্গার সাথে ছবি তুলে বিদায় জানান।
ভক্তরা বিষাদ ভুলে হাসিমুখে দেবী মাকে বিদায় জানাতে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। বিসর্জনের আগ পর্যন্ত তারা একে-অপরকে সিঁদুরে রাঙান, নাচ-গান করেন, যেন সারা বছর এমন আনন্দে কাটে। জেলা শহরের বেশির ভাগ মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হয় বারঘরিয়া ও হুজরাপুর এলাকার মহানন্দা নদীতে। বিকেল ৫টার পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিমা বিসর্জন প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র এলাকায় নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা। এ সময় পুলিশ ও আনসারবাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়। এদিকে বিসর্জনের আগে বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রতিটি মন্দিরে মন্দিরে চলে সিঁদুর খেলা আর আনন্দ উৎসব। শিশু-কিশোর যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠরাও সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন।
শেষবারের মতো দেবী মাকে দর্শন, পূজা করার পাশাপাশি বিদায় দেয়ার জন্য মন্ডপগুলোতে ভিড় জমান ভক্তরা। জীবনের পঙ্কিলতা থেকে মুক্তির আশায় দেবীকে প্রণাম নিবেদন করেন ভক্তরা। নারীরা দেবীর ললাটের সিঁদুর আপন ললাটে এঁকে নেন। আগামী শরতে আবার বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে মা দুর্গা ফিরে আসবেন, সে কামনায় অপেক্ষায় থাকবেন ভক্তরা।
এছাড়া ঢাক, ঢোল, করতাল ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রসহ শোভাযাত্রায় যোগ দেয় বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ-শিশু-কিশোর। নাচতে নাচতে ক্লান্ত হলেও আনন্দের যেন কমতি ছিল না তাদের। বিশাল এ শোভাযাত্রা এগিয়ে চলার সাথে সাথে ও ভক্তদের সমাগম বাড়তে থাকে। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমা নিয়ে যোগ দিতে থাকেন ভক্তরা। তারা এ সময় নেচে-গেয়ে মুখে সিঁদুর মেখে আনন্দে মেতে ওঠেন। প্রতিমাগুলো ট্রলি, ভ্যান ও পিকআপে করে ঘাটে নিয়ে আসার পর শেষবারের মতো ধূপধুনো নিয়ে আরতিতে মেতে ওঠেন ভক্তকুল।
সবশেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে মা দুর্গা ও তার সন্তান কার্তিক, গণেশ, সরস্বতীকে বিসর্জন দেয়া হয়। আর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব। হিন্দু ধর্ম মতে শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য এবং দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনে বিশ্বব্যাপী মঙ্গলবার্তা নিয়ে মা দুর্গা এ সময়ে লোকালয়ে আসেন। পঞ্জিকা মতে, এবার দেবী দুর্গা ঘটকে থেকে আসেন আর ঘটকে ফিরে যান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুজা উজ্জাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু কুমার ঘোষ জানান, পুজো শুরুর পর থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন কে পুজো উজ্জাপনে সকল ধরনের সহায়তা করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন।