আসাদুজ্জামান রিজু ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। তিনি কম্পিউটার সফটওয়্যার অ্যান্ড হার্ডওয়্যার কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করেন। আর হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসন আমেরিকার কেন্টাকি প্রদেশের জর্জটাউন শহরের বাসিন্দা। ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালি এলাকার মনিরুল ইসলামের ৬ তলা বাড়ির ২য় তলার একটি ইউনিট ভাড়া নিয়ে নতুন সংসার পেতেছেন তারা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বছর খানেক আগ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে তারা দুজন বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমেরিকার মায়া ত্যাগ করে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন ডেভিডসন। গত শনিবার ( ২১ অক্টোবর) রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে পরদিন রোববার (২২ অক্টোবর) সকালে পারিবারিকভাবে ঢাকায় বিয়ে সম্পন্ন করেন। এরপর বিকেলে ঈশ্বরদীর বাড়িতে আসেন। ইসলাম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আসাদুজ্জামান রিজুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের আগেই ডেভিডসন খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
আসাদুজ্জামান রিজু জানান, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন ডেভিডসন।
তিনি আরও বলেন, আমরা উভয়ে ভালবেসে বিয়ে করে সুখের সঙ্গে বসবাস করছি। আমার বাসায় প্রতিদিন অনেক লোকজন আসছেন আমেরিকান তরুণীকে দেখতে। আমাদের সঙ্গে সেলফি তুলে তাদের শখ পুরণ করছে। আমরা সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চাই। সুখে দুখে দুজন পৃথক না হওয়ার অঙ্গিকার করছি। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসন ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলেন, আমি এখানে এসে ভালো আছি, আমার ভালো লাগছে।
ঈশ্বরদী শহরের বাসিন্দা খাইরুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদীতে রুপপুর পারমানবিক প্রকল্প হওয়াতে রাশিয়া, বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশের তরুণীদের দেখলেও এই প্রথম কোন আমেরিকান তরুণী আমাদের এলাকায় আসছে। আমরা দেখতে আসছি। খুবই ভাল লাগছে।
ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসহাক আলী মালিথা বলেন, মানুষের থেকে শুনেছি আমেরিকা থেকে একটি মেয়ে প্রেমের টানে ঈশ্বরদীতে এসে বিয়ে করছেন। আমিও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়েছি। তারা বেশ ভালো আছে। আমরা নবদম্পতির জন্য শুভকামনা করছি।
আসাদুজ্জামান রিজুর বাবা আব্দুল লতিফ বলেন, আমার ছেলের কাছে যেহেতু ওই মেয়েটা আসছে তাই আমরা পারিবারিকভাবে এ বিয়ে মেনে নিয়েছি। ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে ঢাকার একটি কাজি অফিসের মাধ্যমে তাদের বিয়ে দিয়েছি। ওদের নতুন সংসারের জন্য যাবতীয় কিছু করে দেওয়া হচ্ছে।