পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক কুকুর ববি মারা গেছে। বুঝতেই পারছেন, একটি কুকুরের বিবেচনায় অনেক দীর্ঘ জীবনই পেয়েছিল সে, সেটা ৩১ বছর ১৬৫ দিন। গত শনিবার পর্তুগালে যে বাড়িতে থাকত, সেখানেই মারা যায় কুকুরটি।
কয়েকবার ববির চিকিৎসা করা পশু চিকিৎসক ড. কারেন বেকার এর মৃত্যুর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেন। হাফেইয়ো দুয়ালিন তেজো জাতের পর্তুগিজ এই ব্রিড গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বিবেচনায় এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি বছর বেঁচে থাকা কুকুর।
‘ইতিহাসের সব কুকুরের চেয়ে বেশি বাঁচলেও তার ১১ হাজার ৪৭৮ দিনের জীবনটা যারা তাকে ভালোবাসত, তাদের জন্য যথেষ্ট নয়।’ লেখেন কারেন বেকার।
গত ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীর বেঁচে থাকা সবচেয়ে বয়স্ক কুকুর এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বয়স্ক কুকুর—দুটি খেতাবই নিজের দখলে নিয়ে নেয় ববি। বিশেষ করে ইতিহাসের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বয়স্ক কুকুরের রেকর্ডটা নিজের করে নেয় সে ৮৪ বছরের পুরোনো এক রেকর্ড ভেঙে।
এর আগ পর্যন্ত ইতিহাসের সবচেয়ে বয়স্ক কুকুরের খেতাবটি ছিল অস্ট্রেলিয়ায় বাস করা ব্লুয়ির। ১৯৩৯ সালে ২৯ বছর পাঁচ মাস বয়সে মারা যায় ব্লুয়ি।
ববির বয়স পর্তুগিজ সরকারের পেট ডেটাবেইসের তথ্য দিয়ে যাচাই করা হয়। এটি পরিচালনা করে ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব ভেটেরিনেরিয়ানস। তবে ববি মারা যাওয়ায় এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক কুকুর হিসেবে কোনটি বিবেচিত হবে, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
বলা হয়, ববির এত দীর্ঘায়ুর পাওয়ার পেছনে ভূমিকা থাকতে পারে তার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করা। গৃহকর্তার মূল ভবনের বাইরের একটি ঘর বা আউট হাউসে তিন ভাই-বোনের সঙ্গে জন্মের পর ববি পর্তুগালের পশ্চিম উপকূলের কাছে কনকেইরোস গ্রামে কস্তা পরিবারের সঙ্গে তার পুরো জীবন কাটিয়েছিল।
লিওনেল কস্তা, যার বয়স তখন আট বছর, বলেছিলেন যে তাঁর বাবা-মায়ের অনেক বেশি পোষা প্রাণী ছিল। এ কারণে ইউথেনাসিয়া বা কুকুরছানাগুলোকে কষ্ট না দিয়ে মৃত্যুর প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করতে বাধ্য হন। তবে ববি পালিয়ে যায়।
মি. কস্তা ও তার ভাইয়েরা কুকুরটির অস্তিত্ব তাদের মা-বাবার কাছ থেকে গোপন রেখেছিলেন। একপর্যায়ে তাঁরা এটিকে আবিষ্কার করেন এবং সেটি পরিবারের অংশ হয়ে ওঠে। পরিবারের সদস্যরা যা খেতেন, কুকুরছানাটিকে তা-ই খাওয়ানো হতো।
২০১৮ সালে একবার ভয় পেয়ে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় কুকুরটি। এ ছাড়া বলা চলে সে চমৎকারই ছিল। কস্তা ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন যে ববি তুলনামূলকভাবে ঝামেলামুক্ত জীবন উপভোগ করেছে এবং তার দীর্ঘায়ুর রহস্য ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে’ বাস করা।
মৃত্যুর আগের সময়টায় অবশ্য তার হাঁটতে সমস্যায় হচ্ছিল এবং দৃষ্টিশক্তি খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
ববিই কস্তার মালিকানাধীন একমাত্র কুকুর নয়, যে দীর্ঘ জীবন পেয়েছে। ববির মা ১৮ বছর বেঁচে ছিল এবং পরিবারের আরেকটি কুকুর ২২ বছর বয়সে মারা যায়।