প্রকাশ: সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৩, ৯:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সেতুটি দীর্ঘ দিনের পুরোনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এমনিতেই চরম ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তাই মাঝে মধ্যে সেতুটির পাটাতন দেবে ও ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সোনাহাট সেতুর স্টিল এর অংশের পাটাতন ভেঙ্গে একটি ট্রাক আটকে যায়। পরে অপর প্রান্ত থেকে অন্য একটি ট্রাক এনে আটকে পড়া ট্রাকের সাথে রশি বেঁধে টেনে তোলা হয়। পরবর্তীতে ট্রাকসহ সকল ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতুটির দুই পাড়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী লোকজন। এতে করে সেতুর দুই পাড়ে যানবাহনের লম্বা সারি দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙ্গে গেছে এবং ট্যাংক জাম (লোহার পাতি) খুলে গেছে। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন।
স্থানীয়রা বলছেন, ব্রিটিশ শাসন আমলে সৈন্য ও রসদ সরবরাহ করার জন্য ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ দিন পর এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সাথে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।
জানাযায়, নির্মাণকালে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়ে ছিল ১০০ বছর। সে মতে সোনাহাট সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। নড়বড়ে সেতুটি যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পাড়ে বড় রকমের দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থল বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম। তাই দ্রুততম সময়ে পাশে পিসি গার্ডার নতুন সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সেতু পারের ব্যবসায়ী শহিদুল, জাহিদুল ও কবির জানান, সোমবার সকালে সেতুটির পাটাতনের জোড়া ছুটে গিয়ে সেতুর ওপর একটি ট্রাক আটকে যায়। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। সেতুটির ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের সময় সেতুটি থর থর করে কাঁপতে থাকে। হাজারো জোড়াতালি দেয়া সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, ওভার লোডের কারণে একটি ট্রাক সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে আটকে যায়। সেটা মেরামতের কাজ চলছে। সন্ধ্যা নাগাদ স্বাভাবিক হবে।এটা অনেক পুরাতন বেইলি ব্রিজ তো মাঝে মাঝেই এরকম হচ্ছে। এখানে আমাদের সাইনবোর্ড দেয়া আছে যাতে ১০ টনের অধিক লোড নেয়া না হয়। তার পরেও ৩০-৪০ টন লোড নিয়ে পন্যবাহী গাড়ি চলছে। অতিরিক্ত লোডের কারণে এই সমস্যাটা হচ্ছে।