প্রকাশ: শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩, ৯:২৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
“আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেন। আমি সাভার থেকে বদলী হতে চাই। আর ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে নিউজ হলে আপনাদের ভাই ব্রাদারেরই ক্ষতি হবে।”
এমনি বক্তব্য দিয়েছেন ঢাকার সাভার উপজেলার বাগধনিয়া ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।
সাভার সদরের বাগধনিয়া ভূমি অফিসে মৌখিকভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বহিরাগত লোকজন। এই অফিসে সেবাগ্রহীতারা এদের কাছে জিম্মি। অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ষ্পর্শকাতর কাগজ-পত্র নিয়ন্ত্রণ করেন এই কথিত দালালেরা। তারা নিজেদের পরিচয় দেন বাগধনিয়া ভূমি অফিসের সরকারী স্টাফ হিসেবে। তারা বসেন কর্মকর্তাদের চেয়ারে। প্রতিনিয়তই এখানে চলে অবৈধ লেনদেন।
এমনি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আলাপকালে ওই অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন,- আমি আজ আছি কাল নেই। আমি এখান থেকে চলে গেলে সাভারের লোকজনেরই ক্ষতি হবে। আপনারা বাস্তব অবস্থা জানেন। এখানে যারা (বহিরাগত মৌখিক নিয়োগ প্রাপ্ত) আছেন তারা আপনাদেরই ভাই ব্রাদার। আমি বর্তমানে অফিস থেকে সব বের করে দিয়েছি। আমার দরকার নেই।
সাভার বাগধনিয়া ভূমি অফিসের দূর্নীতির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, নিউজ করে আমাকে এখান থেকে বদলী করে দেন। আমি আপনার (প্রতিবেদক) সাথে একমত। আমি স্বাগত জানাই। আপনার সংবাদ করা স্বচ্ছ ও ন্যয় সঙ্গত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাগধনিয়া ভূমি অফিসে বছরের পর বছর কাজ করে যাচ্ছেন ৪-৫ জন বহিরাগত লোকজন।
সূত্র জানায়, এদেরকে মাসিক চুক্তির ভিত্তিতে মৌখিকভাবে নিয়োগ দিয়েছেন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। প্রতিমাসে এদের কাছ থেকে তিনি মাসোহারা বাবদ আয় করেন মোটা অংকের অর্থ। এছাড়াও প্রতিদিন এই কথিত দালাল ও স্টাফদেরকে অবৈধ আয়ের একটি অংশ দিতে হয় তাঁকে। জমি সংক্রান্ত যে কোন কাজ করতে গেলে কর্মকর্তা, কর্মচারী, দালালদের সাথে চুক্তি না করলে তা সমাধা হয় না। প্রকাশ্যে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকার অবৈধ লেনদেন হয় এদের মাধ্যমে। এদের বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও লেনদেন করার প্রমান পাওয়া গেছে।
এছাড়াও সেবাগ্রহীতারা টাকা না দিলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা, ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখাসহ দূর্নীতির অনেক অভিযোগ রয়েছে। মানুষের কাছে এভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে তারা নামে ও বেনামে করেছেন অনেক সম্পদ।
ভূমি সংস্কার বোর্ডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ বলেন, ভূমি অফিসগুলোতে বাইরের লোকজনকে দিয়ে এভাবে কাজ করানোর কোন বিধান নেই। এটা সম্পূর্ণ বেআইনী। একটি সরকারী অফিসে এধরনের দূর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার সব সময় তৎপর।