ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ রান। বিরাট কোহলির শতকের জন্যও প্রয়োজন ৮ রানই। এমন দোলাচলের মধ্যেই বাউন্সে ওয়াইড দিলেন হাসান মাহমুদ। তবে শেষ দেখে ছাড়লেন কোহলিও। পরের ওভারে নাসুমকে ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের শতক পূর্ণ করার পাশাপাশি দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক।
বৃহস্পতিবার পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এমসিএ) স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ২৫৬ রান করে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭ উইকেট ও ৫১ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
ভারতের হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। লক্ষ্য তাড়ায় দেখেশুনে খেলেন এ দুই ব্যাটার। এভাবে নির্বিঘ্নে ১২ ওভার কাটিয়ে দেয় তারা।
তবে ফিফটির আক্ষেপ নিয়েই সাজঘরের পথ ধরেন ভারত দলপতি রোহিত। হাসানের বলে ডিপ লেগ স্কয়ারে হৃদয়ের তালুবন্দী হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৪৮ রান করেন এ ব্যাটার।
এরপর উইকেটে আসেন বিরাট কোহলি। ক্রিজে এসেই মাঠের চারপাশ থেকে রান তুলতে থাকেন তিনি। তার পাশাপাশি ওয়ানডেতে নিজের দশম ফিফটি তুলে নেন শুভমান গিল। অবশ্য ফিফটির ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি।
ম্যাচের ২০তম ওভারে মিরাজের বলে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দী হন গিল (৫৩)। তার বিদায়ে ক্রিজে আসেন শ্রেয়স আইয়ার। এর পরেই ক্যারিয়ারের ৬৯তম ফিফটি তুলে নেন তিনি। ম্যাচের ৩০তম ওভারের প্রথম বলেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন আইয়ার।
মিরাজের বলে লং অনে রিয়াদের তালুবন্দী হন শ্রেয়স (১৮)। এরপর লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটি গড়েন কোহলি। ম্যাচের ৪২তম ওভারে নাসুমকে ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের শতক হাঁকানোর পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন কোহলি। যা এবারের বিশ্বকাপে কোহলির প্রথম এবং ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৮তম সেঞ্চুরি।
এদিন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। শুরুর দিকে ভারতীয়দের বল সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে দুই ওপেনারকে।
তবে পঞ্চম ওভারের পর থেকে ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়াতে থাকেন তামিম ও লিটন। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে আসে ৬৩ রান। ইনিংসের ১৪তম ওভারে এসে ৪১ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পান তামিম। তবে ফিফটির পরই আউট হন এ ব্যাটার।
নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ কেউই আজ দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। শান্ত ৮ ও মিরাজ ৩ রান করেন। একপ্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি পূরণ করেন লিটন। বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় অর্ধশতকে পৌঁছাতে তিনি খেলেন ৬২ বল।
দায়িত্বশীল ইনিংস খেলার এক পর্যায়ে জাদেজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শুভমান গিলের তালুবন্দী হন লিটন। এর আগে করেন ৬৬ রান। তাওহীদ হৃদয় টিকে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু ফেরেন হতাশা উপহার দিয়ে। ৩৫ বলে ১৬ রান করেন এ ব্যাটার।
মুশফিকুর রহিম ভালো কিছুর সম্ভাবনা জাগালেও ৩৮ রানের বেশি করতে পারেননি। নাসুম আহমেদ করেন ১৪ রান। শেষদিকে দলকে এগিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ৪৬ রানের বদৌলতে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
ভারতের হয়ে জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ ও রবীন্দ্র জাদেজা দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া শার্দুল ঠাকুর ও কুলদীপ যাদব একটি করে উইকেট নেন।