তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজকে যে ফিলিস্তিনে পাখি শিকারের মত করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, হাজার হাজার অসহায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, এই নিয়ে বিএনপি ও মির্জা ফখরুলের মুখে কোন কথা নেই, আপনারা এদের চিনে রাখুন। ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিশ্চুপ থেকে বিএনপি মূলত ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেটির প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমিও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রতিবাদ জানিয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। আর বিএনপি’র মুখে কোন কথা নাই। একটা বৃহত্তর গোষ্ঠি অখুশি হতে পারে সেই কারণে বিএনপি এই নিয়ে কোন কথা বলে না। অর্থাৎ তাদের অবস্থান ইহুদীদের পক্ষে।
সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ নির্মূল, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে রোববার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরন্দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ উদ্যোগে খরন্দ্বীপ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ফিলিস্তিনের অসহায় নিরীহ মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে, বিএনপি’র মহাসচিবকে যখন সাংবাদিকরা এবিষয়ে বক্তব্য চেয়ে প্রশ্ন করেন, তখন তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, হামাসের উপর কিংবা ফিলিস্তিনের জনগণের উপর হামলা নিয়ে কথা বলার সময় নাই, আমরা দেশে অনেক সমস্যায় আছি। তার মানেটা কি ? প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত এখন অনেক লম্বা লম্বা কথা বলছেন, দেশটাকে তারা বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চান। দেশটাকে বিক্রি করে দিতে চায়। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে সমগ্র পৃথিবী প্রশংসা করছে, আর বিএনপি-জামাতের হিংসা হচ্ছে। পদ্মা সেতু হবার আগে বলেছিল এই সেতু হবেনা। পদ্মা সেতু হবার পর লজ্জায় চুপি চুপি রাতের অন্ধকারে সেতু পাড় হয়েছে বিএনপি নেতারা। এখন পদ্মা সেতুতে রেল চালু হয়েছে। আমি তাদের আহ্বান জানাই, ট্রেনে চড়ে পদ্মা সেতু পাড় হবার জন্য, আপনাদের টিকেটের টাকাও আমরা দিয়ে দেব।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলেছিল অক্টোবর মাসে নাকি ফাইনাল খেলা। তারা তো সেমিফাইনালেও জিতে নাই। তারা বলেছিল খালেদা জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়ার কি মুক্তি হয়েছে? হয় নাই। তাহলে সেমিফাইনালে হেরে গেছে বিএনপি। যারা সেমিফাইনালে হেরে গেছে তাদের সাথে কি ফাইনাল খেলা হয়? হয় না। তারা যদি খেলতে চাই, তাহলে যুবলীগের সাথে খেলতে পারে। আওয়ামীলীগ তাদের সাথে খেলবে না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ২২ টি প্রকল্পের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ নানা ধরনের ভাতা প্রদান করছে। এর বাইনে ওএমএসের চাল ও ফ্যামিলি কার্ড প্রদান করা হয়। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে উপকারভোগী আছেন, তারা যে পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করেন সরকার তার দ্বিগুণ পরিশোধ করেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য যেভাবে নানা ধরনের সুবিধা আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে এটি অতীতে কেউ করেনি।
তিনি বলেন, প্রতিটা ইউনিয়নে দুই থেকে তিন হাজার উপকারভোগী আছে। তারা সরকারের নানা ধরনের ভাতা পাচ্ছে। আগেও খালেদা জিয়া, এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের সরকার ছিল, কিন্তু এসব আগে কখনো ছিলনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন ৯৬ সালের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পান তখন থেকে এসব ভাতা চালু হয়েছে। ২০০১ সালে যখন বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসেন, তখন এসব ভাতা সংকুচিত হয়ে গেল। তাই আবারও যদি সেই বিএনপি ক্ষমতায় আসে আপনারা যারা এ ধরনের ভাতা পাচ্ছেন সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
শ্রীপুর-খরন্দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় ও ইউপি চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি নুরুল হুদা, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সেকান্দর আলম বাবর প্রমুখ।