প্রকাশ: শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩, ১১:১০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে দিন দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘঠিত চাঞ্চল্যকর ডাকাতির রহস্য উদ্ঘাটনসহ ভয়ঙ্কর তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশ। এসময় গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতি করে নেওয়া ১৬ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা এবং ডাকাতির সময় ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার।
জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি সুত্রে জানা যায় চলতি মাসের গত ৮ অক্টোবর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল দেওয়ানগঞ্জ বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন ইসলামী ব্যাংক ভালুকা শাখা হতে নিজের একাউন্ট থেকে ১৬ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে ৫ জন যাত্রীসহ ভাড়ায় চালিত সিএনজিযোগে নান্দালের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে।
সিএনজি গাড়িটি গফরগাঁও থানাধীন এশিয়ান হাইওয়ের টানপাড়া নামক নির্জন এলাকায় পৌঁছামাত্রই একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার সিএনজিটির গতিরোধ করে এবং ৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠিয়ে নিয়ে যায়। গাড়ির ভিতরে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ১৬ লক্ষ টাকা ও সাদ্দাম হোসেনের ব্যবহৃত ০২ টি মোবাইল ফোন ডাকাতি করে। পরবর্তীতে ডাকাতরা সাদ্দাম হোসেনকে হাত ও চোখ বাধাঁ অবস্থায় গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন ভান্নারা বাজারে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।
ঘটনার একদিন পর সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করে। ঘটনাটি অবগত হওয়ার সাথে সাথেই ময়মনসিংহের জেলা পুলিশ সুপার এসপি মাছুম আহাম্মদ ভুঞা জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ওসি ফারুক হোসেনকে অতি দ্রুত ডাকাতদের গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধারের নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পওয়ার পর থেকেই ডিবির ওসি ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকষ টিম ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৩ অক্টোবর শুক্রবার রাত সোয়া ২টার দিকে গাজিপুর হতে আনোয়ার হোসেনকে (৩৯) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা সাভার থেকে লিটন কাজী ওরফে দেলোয়ার কাজী (৪০), রুবেল মিয়া (৩২)সহ তিন শীর্ষ ডাকাতকে গ্রেফতার করে।
ডাকাত আনোয়ার সিরাগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার কোনাবাড়ি এলাকার বাসীন্দা মোস্তফা মোল্লার ছেলে। ডাকাত লিটন কাজী ওরফে দেলোয়ার কাজী রাজবাড়ি জেলার ঠাকুর নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোতালেব কাজীর ছেলে।ডাকাত রুবেল মিয়া -গোপালগঞ্জ সদর এলাকার বাসিন্দা আজাদ মিয়ার ছেলে। গ্রেফতারকৃত এই তিন ডাকাতদের কাছ থেকে সর্বমোট ৪,৭০,০০০/-(চার লক্ষ সত্তর হাজার) টাকা উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
শনিবার জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবির ওসি ফারুক হোসেন জানান, ৩ ডাকাতের মধ্যে আসামি আনোয়ার হোসেন ও রুবেল মিয়া ওরফে রুবেল মুন্সি ডাতির ঘটনার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি প্রদান করেছে। ডাকাতির মূলহোতা আসামী লিটন কাজীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১০টিরও অধিক ডাকাতিসহ দস্যুতা ও মাদক মামলা রয়েছে। আসামী মোঃ রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে ২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামীসহ পলাতক আসামীরা ভালুকা থানাধীন জামিরদিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে র্যাবের পোষাক পরিধান করে প্রাইভেটকারে জনৈক মোহাঃ শুভান আলী শুভকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৭,৪০,০০০টাকা, ১টি মোবাইল এবং ভালুকা থানাধীন হবিরবাড়ী সীডষ্টোর বাদশাগ্রুপের কামাল ইয়ার্ণ লিমিটেড এর সামনে প্রাইভেটকারযোগে র্যাব পরিচয় দিয়ে জনৈক কানাই চন্দ্র বর্মনকে গতিরোধ করে ৫,০০,০০০ টাকা ডাকাতি করেছিল যা এতদঅঞ্চলের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া এবং জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যহত আছে বলেও জানান ওসি ফারুক হোসেন।