প্রকাশ: বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩, ৫:০৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বরগুনার তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে মিথ্যা মামলা নেওয়া ও ইউপি চেয়ারম্যান মো.বাচ্চু মিয়ার নির্বাচন না করায় মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগি পরিবারসহ এলাকাবাসী। এছাড়াও ওসি তদন্ত, এসআই ও দুই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগে বিচারের দাবি জানিয়েছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১০টার দিকে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মেনিপাড়া এলাকায় ভুক্তভোগি পনু ঘরামীর স্ত্রী সাহেরা বেগম তার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে একই দিনে বেলা ১১ টার দিকে একই ঘটনায় এলাকাবাসি মানববন্ধন করেন।
সংবাদ সম্মেলন সূত্রে জানা যায়, মসজিদ-মাদ্রাসার কমিটি ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. বাচ্চু মিয়া ও ইউপি সদস্য জসিমের নির্বাচনে সর্মথন না করার কারণে মুদি দোকানদার পনু ঘরামীর সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে গত ৭ অক্টোবর পার্শবর্তী মরা নিদ্রা এলাকার ৭ম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রী পনু ঘরামীর মুদি দোকানে ঝালমুড়ি ক্রয় করতে আসেন। এসময় ঐ স্কুল ছাত্রী পিছলে পড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে পনু ঘরামীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে এলাকায় শালিস ডাকেন ইউপি সদস্য জসিম ও চেয়ারম্যান বাচ্চু মিয়া। সেখানে যৌন নিপীড়নের মামলা থেকে রেহাই পেতে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এই টাকা না দেওয়ার কারণে ইউপি সদস্য জসিম ও জামাল খানের যোগসাযোসে গত ৮ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১টার দিকে বিনা অভিযোগে ওসি তদন্ত রনজিত কুমার সরকার ও এসআই আবু জাফর যৌন নিপীড়নের অভিযুক্ত করা পনু ঘরামীকে ধরতে তার বাড়ি যায়। সেখানে পনু ঘরামীকে না পেয়ে তার বাড়িতে তল্লাসি করে ঘরের বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও গলার চেইন, হাতের আংটি নিয়ে আসেন দুই ইউপি সদস্য, ওসি তদন্ত, এসআই। পরে তারা হুমকি দিয়ে আসেন যে, আমরা তোর (পনু ঘরামীর স্ত্রী)বাড়িতে আসছি এই ঘটনা কোথাও বলাবলি করলে তোর স্বামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিবো। সেই মামলা থেকে জীবনেও রেহাই পাবি না বলে তারা চলে যায়।
এই ঘটনা জানাজানি হলে গত ৯ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম খান, ওসি তদন্ত রনজিত কুমার সরকার ও এসআই আবু জাফরসহ পুলিশের একটি টিম পনু ঘরামীর বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মিমাংশা করার কথা বলেন। আর এই বিষয়ে কোনো মামলা হবে না বলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে আসেন। পরে ১০ অক্টোবর বর্তমান চেয়ারম্যান মো. বাচ্চু মিয়া ঐ স্কুল ছাত্রীর বাবাকে দিয়ে পনু ঘরামীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়গুলো তদন্ত করে সঠিক বিচারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগি পরিবার ও এলাকাবাসি।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, এই সব ঘটনা মিথ্যা ও বানোয়াট। স্কুল ছাত্রীর যৌন নিপীড়নের মামলা থেকে বাঁচতে তারা এগুলো করছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম খান বলেন, ভুক্তভোগীরা আসছে মামালা দিতে আমি মামলা নিয়েছি।আমি যেন মামলা না নেই এজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করে। তাদের অন্যায় আবদার মেনে না নেওয়ায় তারা আমাদের বিরোদ্বে অভিযোগ করছে। এই মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এই সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধ করেছেন।পুলিশ আইনের ঊর্ধে না আমরা আইনের বাইরে কিছু করিনি। অভিযোগ ছাড়া রাত ১ টায় পনু ঘরামীর বাসায় কোনো পুলিশ যায়নি।