মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনে বহু শিশুর বাল্যকাল কেড়ে নিচ্ছে
জাতিসংঘের ‘রেড-অ্যালার্ট’
আরিফুর রহমান
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৩, ৮:১৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

বাংলাদেশে কয়েক কোটি উপরে শিশুর জীবন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সরাসরি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। জলবায়ু পরিবর্তন শিশুদের জীবনে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে সেই বিষয়ে এই প্রথম কোন প্রতিবেদন প্রকাশ করলো জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের সবচাইতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি করছে। তারা তাদের শিশুদের পর্যাপ্ত খেতে দিতে পারছে না, তাদের সুস্থ রাখতে পারছে না। তাদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।’ এর ফলে শিশুদের নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।প্রতিবেদনটি বলছে, দায়িত্ব নিতে না পেরে মেয়ে শিশুদের অনেক পরিবার দ্রুত বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। তিনি আরো বলেছেন, সারা দেশে বিশটি জেলার শিশুরা সবচাইতে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত অনেক পরিবার নিজের এলাকায় সর্বস্ব হারিয়ে এক পর্যায়ে কাজের খোঁজে শহরে চলে আসছে। লোনা পানি কীভাবে গর্ভপাত ঘটাচ্ছে নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ। বাল্যবিয়ে ঠেকানোর মোবাইল অ্যাপ এলো বাংলাদেশে  সেই সব পরিবারের শিশুদের জন্য পাচার এমনকি যৌন পেশায় বাধ্য হওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। সবচাইতে ঝুঁকিতে রয়েছে এক কোটি ২০ লক্ষ শিশু। যাদের বসবাস বাংলাদেশে নদীপথ গুলোর পাশে, তাদের ক্ষেত্রে নদীভাঙন একটি নিয়মিত ব্যাপার।

নিয়মিত সাইক্লোনের ঝুঁকিতে রয়েছে ৪৫ লক্ষের মতো শিশু, যারা সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাস করে। তাদের মধ্যে রয়েছে বহু রোহিঙ্গা শিশু। এসব রোহিঙ্গা শিশু খুব দুর্বল আবাসন ব্যবস্থায় বসবাস করছে। খরা আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৩০ লক্ষের মতো। 

হেনরিয়েটা ফোর বলছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন বহু শিশুর বাল্যকাল কেড়ে নিচ্ছে।’ জীবনের তাগিদে তাদের অনেক দ্রুত বড় হয়ে উঠতে হচ্ছে এবং নিজের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে বলে বলছে ইউনিসেফ।

জাতিসংঘের ‘রেড-অ্যালার্ট’: জাতিসংঘের একটি বিজ্ঞানী প্যানেল হুঁশিয়ার করেছে - মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন দ্রুত হারে সাগর-পৃষ্টের উচ্চতা বাড়ছে এবং বরফ গলছে। সেই সাথে, জীব-জন্তুর বিভিন্ন প্রজাতি তাদের আবাসস্থল বদলাচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বরফের আচ্ছাদন বিলীন হওয়ার কারণে কার্বন নি:সরনের মাত্রা বেড়ে গেছে। যার ফলে, পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। 

আইপিসি বা জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্যানেলের সর্ব-সাম্প্রতিক একটি বিশেষ রিপোর্টে এসব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে এটি তাদের তৃতীয় রিপোর্ট। এর আগে বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করেছেন, এই শতকের শেষভাগে গিয়ে যদি বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ শতাংশ বেড়ে যায়, তার পরিণতি কী হতে পারে। সর্বশেষ এই রিপোর্টে দেখা হয়েছে, তাপমাত্রার বাড়ার কারণে সমুদ্র এবং বরফে আচ্ছাদিত অঞ্চলের ওপর তার প্রভাব কী হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এবার যা পেয়েছেন, তা আগের রিপোর্ট গুলোর তুলনায় অনেক বেশি ভীতিকর। ‘ব্লু-প্ল্যানেট (পৃথিবী) এখন মহা-সঙ্কটে। বিভিন্ন দিক থেকে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, এবং এর জন্য আমারাই দায়ী।’

বলছেন ড. জ্যঁ পিয়ের গুাত্তুসো, যিনি এই রিপোর্টের প্রধান প্রণেতা। বিজ্ঞানীদের এখন কোনো সন্দেহ নেই যে সাগর-মহাসাগরে উষ্ণতা ১৯৭০ সাল থেকে অব্যাহত-ভাবে বাড়ছে। মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের ফলে পরিবেশে যে বাড়তি তাপ তৈরি হচ্ছে, তার ৯০ শতাংশই শুষে নিচ্ছে সাগর। ১৯৯৩ সাল থেকে শুষে নেওয়ার এই মাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। সেই সাথে গলছে গ্রিনল্যান্ড এবং অ্যান্টার্কটিকার বরফ। বাড়ছে সাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে হারে অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলেছে তার আগের ১০ বছরের তুলনায় তিনগুণ। অ্যান্ডিজ, মধ্য ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়ায় যেসব হিমবাহ রয়েছে, সেগুলোর বরফ ২১০০ সাল নাগাদ ৮০ শতাংশ গলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।বরফ গলা পানি গিয়ে পড়ছে সাগরে।

ফলে, আগামী দশকগুলোতে সাগর-পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েই চলবে। আইপিসিসির নতুন এই রিপোর্টে বলা হয়েছে ২১০০ সাল নাগাদ সাগর-পৃষ্ঠের উচ্চতা ১.১ মিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।আগের ধারণার চেয়ে এই উচ্চতা ১০ সেমি বেশি।ড. গাত্তুসো বলছেন, ‘নিচু জায়গাগুলোতে সাগরের উচ্চতা বাড়ার পরিণতি হবে ব্যাপক। ৭০ কোটি মানুষ এরকম নিচু উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করে। ফলে বিষয়টি খুবই উদ্বেগের।’

রেকর্ড তাপমাত্রার রিপোর্ট সাধারণত একটি আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে পাওয়া উপাত্ত থেকে পাওয়া যায়। তবে আমরা যেই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছি তা অপেক্ষাকৃত বড় জায়গা জুড়ে নেয়া হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক বিশ্বের উষ্ণতম স্থানগুলোর একটি। গ্রীষ্মে পার্কটির বিশেষ বিশেষ জায়গার তাপমাত্রা নিয়মিতভাবে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে।

কিন্তু এই পার্কের আশেপাশের এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এলাকার গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যখন মাপা হয়, তখন গড় তাপমাত্রার মান ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে। 

১৯৮০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রতিদিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তথ্য নিয়ে আমরা শনাক্ত করেছি যে তাপমাত্রা কতটা ঘনঘন ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি অনুভূত হয়। বছরে কতদিন এবং কত জায়গায় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি বা তার বেশি অনুভূত হয়, আমরা তা গণনা করি যেন সময়ের সাথে সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ধারা যাচাই করতে পারি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পরিবর্তনও আমরা পর্যবেক্ষণ করি। 

সাম্প্রতিক দশকে (২০১০-২০১৯) ভূ-পৃষ্ঠ ও সমুদ্র পৃষ্ঠের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে তার আগের ৩০ বছরের (১৯৮০-২০০৯) গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পরিবর্তন যাচাইয়ের মাধ্যমে এই পর্যবেক্ষণটি করি আমরা। 

সম্প্রতি, ইউরোপে প্রবল বৃষ্টিপাতে জার্মানি সহ নানা দেশে নজিরবিহীন বন্যা হয়। প্রত্যেকটি অঞ্চলকে ধরে নেয়া হয়েছে ২৫ বর্গ কিলোমিটার, অথবা বিষুবরেখায় ২৭-২৮ বর্গ কিলোমিটার। এই গ্রিডগুলো বিস্তৃত এলাকাজুড়ে থাকতে পারে এবং ভিন্ন ধরণের ভৌগলিকএলাকাজুড়ে বিস্তৃত হতে পারে। এই গ্রিডগুলো .২৫ ডিগ্রি অক্ষাংশ ও .২৫ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশের বর্গাকার অঞ্চল হিসেবে ধরে নেয়া হয়েছে।
 
লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক ভোরের পাতা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]