পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করা রাকিব মৃধা। তিনি সংগঠনের আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নানা অপকর্মের দায়ে বহিষ্কার হয়ে তা অনৈতিক সুবিধা দিয়ে প্রত্যাহার করানোর পর এখন আবার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন রাকিব মৃধা। এমনকি জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ এক নেতাকে অগ্রিম হিসাবে উপঢৌকনও প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহ্বাজ কাজী আলমগীর, মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী আতহার উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উ্দিন জুয়েল বেপারী, মাধবখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান লাভলু কাজী, মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাক ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহেদুল ইসলাম সোহেল, মজিদবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার কিসলু, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান সিকদার লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নৌকা বিরোধী, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতনের মামলার আসামি রাকিব মৃধাকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি না করার জন্য জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে ৭ দিনের মধ্যে নতুন কমিটির সভাপতি-সম্পাদক হতে আগ্রহীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়।
নেতাকর্মীদের বক্তব্য, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রধান কর্মীর ভূমিকা পালন করেন রাকিব। ওই সময় নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকদের ওপর সঙ্গে নানা দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান লাবলু বলেন, তার কাজই হলো নৌকার বিরোধিতা করা। তার মনমতো নিজস্ব কেউ নৌকা না পেলে জননেত্রী শেখ হাসিনা দিলেও কাজ হবে না।
রাকিব মজিদবারিয়া ইউনিয়নে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি ও রাজাকার পরিবারের সন্তান শানু মোল্লার পক্ষে। একাধিক মঞ্চে উঠে তার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। মজিদবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সারোয়ার কিসলু বলেন, আমার বিরোধী প্রার্থীর বাবা ছিল শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজাকার। তার পুত্র শানু মোল্লার পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুবকর ও তার অনুসারীরা বিশেষ করে রাকিব মৃধাসহ আরো কয়েকজন কাজ করেছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী আতাহার উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, রাকিব আমার নির্বাচনের সময় দাঙ্গা-হাঙ্গামা তো করেছেই, সেই জের ধরে ফাঁক পেলে এখনো করে। অতএব এই ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হলে দলের এবং নেতাকর্মীদের ক্ষতি হবে।
উপজেলা ছাত্রলীগের জন্য অস্থায়ী কার্যালয়ের ভবনটি বিক্রির পরিকল্পনাও করেছিলেন এই রাকিব মৃধা। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার চাচাতো ভাই মাদকসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় নারীদের সঙ্গে তার অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ভোরের পাতার হাতে এসেছে।
এ বিষয়ে জানতে রাকিব মৃধাকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।