এর আগে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৪৯ ওভারে সব কয়টি উইকেট নেদারল্যান্ডসকে ২৮৭ রানের টার্গেট দেয় পাকিস্তান। এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪১ ওভারে ২০৫ রানে গুটিয়ে যায় ডাচরা। ফলে ৮১ রানের জয় নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করল পাকিস্তান দল।
আজকের খেলার শুরুতে ২৮৭ রানের টার্গেট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ডাচ শিবিরে আঘাত হানে দীর্ঘ দিনপর জাতীয় দলে ফেরা হাসান আলী। দলীয় ষষ্ঠ ওভারে হাসান আলীয় বলে শাহিন শাহ আফ্রিদির হাতে ক্যাচ তুলে প্যালিভিয়নে ফিরেন ম্যাক্স ও’দাউদ। এ সময় তিনি করেন ১২ বলে ৫ রান। এরপর মাঠে নামেন কলিন অ্যাকারম্যান।
তিনি বেশিক্ষণ পিচে টিকে থাকতে পারেননি। দলীয় ১২তম ওভারে বোল্ড হয়েছেন তিনি। ইফতেখার আহমেদের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মিস করে আউট হয়েছেন কলিন। এ সময় কলিন করেন ২১ বলে ১৭ রান। এরপর মাঠে নামেন বাস ডি লিড। তিনিও যোগ্য সঙ্গ দেন বিক্রমজিৎ সিংয়ের। এই দুই জনে ৬০ রানে জুটিতে শত রান পার করেন ডাচরা।
দলীয় শত রান পার করতে গিয়ে শুনে খেলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক পূর্ণ করেন বিক্রমজিৎ সিং। এরপর দলীয় ২৪ তম ওভারে শাদাব খানের বলে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ তুলে সাঝঘরে ফিরেন সিং। এসময় তিনি করেন ৬৭ বলে ৫২ রান। এরপর মাঠে নামেন তেজা নিদামানুরু। তিনি বেশিক্ষণ পিচে থাকতে পারেননি।
দলীয় ২৬ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে হারিস রউফের বলে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ তুলে সাঝঘরে ফিরেন ডাচ তেজা। ওই ওভারের চতুর্থ বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন স্কট এডওয়ার্ডস। ডাচ এই দুই ব্যাটার দুই অংকের সংখ্যায় পার করতে পারেননি। এরপর মাঠে নামেন সাকিব জুলফিকার। তিনি বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি।
দলীয় ৩৩ ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন সাকিব। এ সময় তিনি করেন ১৮ বলে ১০ রান। এরপর মাঠে নামেন রোলফ ফন ডার মারওয়ে। তিনিও বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি। শেষ দিকে লোগান ফন ব্যক্তিগত ২৮ রান যোগ করলেও হার এড়ানো সম্ভব ছিল না।
পাকিস্তানের হয়ে এদিন তিন উইকেট নেন হানিস রউফ। জোড়া উইকেট নেন হাসান আলী। একটি করে উইকেট নেন শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজ, ইফতেখার আহমেদ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি।
দুপুরে টস জিতে পাকিস্তানের উদ্বোধনীয় ব্যাটিংয়ে নামেন ফখর জামান ও ইমাম-উল-হক। ম্যাচের শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন এ দুই ব্যাটার। অবশ্য দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ফখরকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছে ডাচরা।
ম্যাচের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে ফখরকে নিজের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন বিক। আউট হওয়ার আগে ১২ রান করেন এ বাঁ-হাতি ব্যাটার।
পরে বাইশ গজে আসেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। তবে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন পাকিস্তান দলপতি। তার বিদায়ের পরপরই ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা দেন পাক ওপেনার ইমাম-উল-হক। বিকের বলে মিকেরেনের তালুবন্দী হওয়ার আগে ১৫ রান করেন তিনি।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে পাকিস্তান। তবে চাপ সামলে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নেন সৌদ শাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ান জুটি। এই দুই জনের জুটিতে ১৪৮ রান যোগ হয় পাকিস্তান দলে। এরই মধ্যে ৫৮ বলে ক্যারিয়ারে নিজের ১৩তম অর্ধশতক পূরণ করলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। অন্যদিকে ৫৬ বলে ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নেন সৌদ শাকিল।
দলীয় ২৯ তম ওভারের মাথায় ম্যাক্স ও’দাউদের বলে সাকিব জুলফিকারে হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যালিভিয়নের পথে ফিরেন সৌদ শাকিল। এ সময় তিনি করেন ৫২ বলে ৬৮ রান। এরপর মাঠে নামেন ইফতেখার আহমেদ। তিনিও বেশিক্ষণ পিচে টিকে থাকতে পারেননি।
দলীয় ৩২তম ওভারে বাস ডি লিডের বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন ইফতেখার। তিনি করেন ৯ রান। ইফতেখারের বিদায়ের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পিচে থিতু হওয়া মোহাম্মদ রেজওয়ানওকে ফেরান বাস ডি লিডে। যাওয়ার আগে রেজওয়ান করেন ৬৮ রান। শেষ দিকে মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাদাব খান দলের হাল ধরেন। দুইজন মিলে গড়েন ৬৪ রানের জুটি। তাতে কিছুটা ভিত পায় বাবর আজমের দল।
দলীয় ৪৪তম ওভারে আউট হন শাদাব খান। বাস ডি লিডের বলে বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন পাকিস্তানের এই ব্যাটার। এ সময় তিনি করেন ৩৪ বলে ৩২ রান। এরপরে মাঠে নামেন হাসান আলী। তিনিও রানের খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। শেষ দিকে নওয়াজ করেন ৩৯ রান।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে চার উইকেট নেন বাস ডি লিড। দুইটি উইকেট নেন কলিন অ্যাকারম্যান। বাকি একটি করে উইকেট নেন আরিয়ান দত্ত, লোগান ফন বিক ও পল ফন মিকেরেন।