শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
'কোটি টাকা আত্মসাতের' অভিযোগ: বিমানের জিএমের বিরুদ্ধে দুদুকের অনুসন্ধান শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩, ৮:৫৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিমানের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের’ অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজিজুল ইসলাম এর আগে প্রকল্প ও পূর্ত শাখার জিএম ছিলেন। ওই সময়ে তাঁর তত্ত্বাবধানে বিমানের স্টাফ কোয়ার্টার ও বলাকা ভবনের ক্যানটিনের সংস্কারসংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র চেয়ে বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছে দুদক।

ভোরের পাতার হাতে আসা ওই চিঠিতে জানানো হয়- আজিজুল ইসলাম বর্তমানে এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস বিভাগের জিএম। এই দায়িত্বে আসার পর বিদেশি এয়ারলাইনস থেকে ভ্যাট ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বাবদ অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বিমানের বিলম্বিত ফ্লাইটের অপেক্ষমাণ যাত্রীদের হোটেলে রাখা এবং বিজনেস ক্লাসের (অভিজাত শ্রেণি) যাত্রীদের আপ্যায়ন বিল বাবদ অর্থ আত্মসাতের ঘটনা বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তাই হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করা বিমানের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের আপ্যায়ন বিলের কাগজপত্র এবং যাত্রীদের তালিকা চেয়েছে দুদক।

এছাড়া আজিজুল ইসলাম এর আগে প্রকল্প ও পূর্ত শাখার জিএম ছিলেন। ওই সময়ে তাঁর তত্ত্বাবধানে বিমানের স্টাফ কোয়ার্টার ও বলাকা ভবনের ক্যানটিনের সংস্কারসংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রও চেয়েছে দুদক। 


দুদক বলছে- ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিমানের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন আজিজুল। দুর্নীতির অভিযোগের নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের স্বার্থে, আজিজুলের দায়িত্বকালে বিদেশি এয়ারলাইনস থেকে ভ্যাট ও হ্যান্ডলিং বাবদ কত টাকা আয় হয়েছে, সেটার বিবরণী, অপেক্ষমাণ যাত্রীদের যেসব হোটেলে রাখা হয়েছে, সেসব হোটেলের সঙ্গে চুক্তিপত্র, হোটেল ভাড়া বাবদ পরিশোধিত বিলের কাগজপত্র দরকার। চিঠিতে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে যাবতীয় কাগজপত্রের অনুলিপি দুদকে দিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, জিএম আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর আগে বিভিন্ন নিরীক্ষায় তাঁর অনিয়মের কথা এসেছে, কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরের বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা যায়, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অপেক্ষমাণ বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের জন্য আপ্যায়নের (খাবার সরবরাহ) ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০২১ সালে চুক্তি করে বিমান কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী, বিজনেস ক্লাস যাত্রীদের জন্য ওই প্রতিষ্ঠান থেকে খাবার সরবরাহ করা হয়। জনপ্রতি খাবারের বিল ধরা হয় ১ হাজার ৬৫০ টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, যাত্রীদের বোর্ডিং পাস দেওয়ার সময় একটি করে কুপন দেওয়া হয়। লাউঞ্জে সেই কুপন জমা দিয়ে যাত্রীরা খাবার নেন। আর বিমানের কাছ থেকে বিল নেওয়ার সময় ওই প্রতিষ্ঠানটিকে সব কটি কুপন ও যেসব যাত্রীর বিপরীতে কুপনগুলো দেওয়া হয়েছিল, তার তালিকা বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়।

বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, খাবার সরবরাহ করা হয়েছে ৪০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা মূল্যের। এর মধ্যে চুক্তির বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকেও খাবার দেওয়া হয়। আর এসব খাবারের বিপরীতে বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো কুপন ও যাত্রীর তালিকা নেই। নিরীক্ষায় এসেছে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কেবল এক বছরেই এই খাবার বাবদ বিমানের প্রায় ৩০ লাখ ৪৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

বিমান সূত্র বলছে, কুপন ও যাত্রী তালিকা না থাকার অর্থ খাবারের ভুয়া বিল করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীর খাবার সরবরাহের দায়িত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আজিজুল ইসলামের। এই অনিয়মের অভিযোগ তাই তার বিরুদ্ধেই উঠেছে।

আজিজুল ২০২২ সালের মার্চে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পর পর দুই বছরের জন্য তিনি চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছেন। এই পদে মেয়াদ বৃদ্ধির এমন ঘটনা বিমানে নজিরবিহীন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়।

এ ছাড়া বিদেশি এয়ারলাইনসের নন–শিডিউল ফ্লাইট (অনির্ধারিত ফ্লাইট) থেকে বিমানের প্রকৃত পাওনা অপেক্ষা কম টাকা নেওয়া এবং ভ্যাট আদায় না করে নিজে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলেও আজিজুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। অপেক্ষমাণ বিমানের যাত্রীদের যেসব হোটেলে রাখা হয়, সেখান থেকেও কমিশন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ওপর ২০২১-২২ অর্থবছরের বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনও দুদকের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়েছে। আর এই বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য দুদক ইতিমধ্যে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করেছে বলেও জানা গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে আজিজুল ইসলাম ভোরের পাতাকে বলেন, দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে কোনো দুর্নীতির সঙ্গেও জড়িত নেই বলে দাবি তার।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]