পাবনা শহরে পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে ছাত্রলীগের একপক্ষের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে আরেকপক্ষ। এতে অন্তত ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ ১১ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। শনিবার রাত ১০টার দিকে শহরের মাসুম বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত নেতাকর্মী ও পুলিশ জানায়, সম্প্রতি পাবনা মহিলা কলেজের সামনে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান এবং পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতে আরাফাত সিফাত গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে কিছুদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল।
শনিবার রাত ১০টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান তার সমর্থকদের নিয়ে বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, পথিমধ্যে মাসুম বাজারে পৌঁছামাত্র তাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে সিফাত ও তার সমর্থকরা। এতে ৮ জন গুলিবিদ্ধ ও ৩ জন ছুরিকাহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাহত সজিব নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক। ঘটনার পর থেকে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, রাফি, আরাফাত, মিলন, রিহাব, আকাশ, সজিব, শান্ত, রঞ্জু, তানজীদ। এরা সবাই মেহেদী হাসানের সমর্থক, ছাত্রলীগের কর্মী। আহতদের মধ্যে সজিব গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাহত এবং রঞ্জু ছুরিকাহত হয়েছেন। বাকিরা সবাই গুলিবিদ্ধ।
মেহেদী হাসান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজের এবং ইফতে আরাফাত সিফাত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর রাফিউল ইসলাম সীমান্তের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, মেহেদী হাসান লোকজন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়ার সময় সিফাত গ্রুপের লোকজন গুলি করে। এতে ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, ‘সিফাতের লোকজন মেহেদীর লোকজনের ওপর হামলা করেছে। তাদের মধ্যে আগে থেকেই ঝামেলা চলছিল। আমরা বারবার গিয়ে সমাধান করলেও কয়েক দিন পর আবারও তারা ঝামেলায় জড়িয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, ‘শনিবার রাত ১০টা থেকে সোয়া ১০টার দিকে পার্টি অফিসে যাবার সময় সিফাত তার লোকজন নিয়ে আমাদের মোটরসাইকেল বহরের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। এতে আমার পক্ষের লোকজন গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাহত হয়েছে। সিফাতের এত অস্ত্র আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের উৎস কোথায় তা খতিয়ে দেখে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।’
তবে আগে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে পাবনা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতে আরাফাত সিফাত বলেন, ‘আমি আমার অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলছিলাম। এসময় হঠাৎ ২০-৩০ জন লোক নিয়ে মেহেদী আমার ওপর হামলা করে গুলি করে। এতে আমি কোনো মতে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।’