হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী জামিন দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আবেদন করেছে তার পরিবার। তবে মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে এই চিঠি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ওই চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাইরে পাঠানোর জন্য দুই-তিন দিন আগে শামীম ইস্কান্দার সাহেব এসেছিলেন। ওইদিনই বলে দিয়েছি। আমার কাছে চিঠি দিয়েছেন। আইনি জটিলতার কারণে চিঠিটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। উনি (আইনমন্ত্রী) এখন ব্যাখ্যা দেবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, আবেদনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি, ম্যাডামের পরিবার থেকে আবেদন করা হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, খালেদ জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা বিষয়টি পুরোপুরি দেখভাল করছে তার পরিবার। এখানে দলের তেমন কোনও সম্পৃক্ততা নেই। তারপর এখন সরকারের পক্ষ থেকে যদি বিদেশে যাওয়ার অনুমতি জন্য রাজনৈতিকভাবে বিএনপির সঙ্গে বসতে চায় তখন আমরা বসবো।
গত ৯ আগস্ট ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। ওই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি নেত্রীর লিভার, কিডনি, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস- এসব প্রত্যঙ্গে নতুন নতুন সমস্যা বা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। যখন যে উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তা প্রশমিত করা বা ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হয়। সেদিন থেকে প্রায় দুই বছর কারাবন্দী ছিলেন তিনি। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারির শুরুতে তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল সরকার। এরপর থেকে তার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে।