প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৯:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ময়মনসিংহের জেলা পুলিশ সুপার এসপি মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেছেন, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চেয়েও জঙ্গিবাদে অনেক বেশি দীক্ষিত হচ্ছেন বিশ^বিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে আমরা পরিসংখ্যানে চালিয়ে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছি।আধুনিক শিক্ষা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারাই এখন বেশির ভাগ জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে।
আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে জঙ্গি মানেই মাদরাসা শিক্ষার্থী এমনটা নয়। এখন আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে দীক্ষিত হচ্ছে। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, ইউটিউব, বিভিন্ন সফটওয়ার এর মূল মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মমনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অডিটরিয়ামে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক বিরোধী’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন তিনি। সকল প্রকার অপরাধ দমনের মধ্যে দিয়ে জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতির আমূল উন্নয়নের কারিগর ময়মনসিংহের জনপ্রিয় পুলিশ সুপার এসপি মাছুম আহম্মেদ বলেন, এদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। যারা দেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারে না তারা দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষপাষ্প ছড়ায়। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করতে চাইছে। আপনাদের মাথায় রাখতে হবে সামনে শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে সাম্প্রদায়িকতা বিঘ্ন হয় এমন কিছু করতে দেওয়া হবে না।
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নগরীসহ জেলার সব এলাকার মাদরাসা ও স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। তারই অংশ হিসেবে আজ এ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
কুমিল্লার জেলেপাড়ায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফেসবুকে অনেক নিউজ হয়। ফেসবুকের সকল সংবাদ কতটুকু সত্য যা যাচাই করতে হবে। সোস্যাল মিডিয়ার গুজব যাচাই করতে হবে কতটুকু সত্যা বা মিথ্যা। ফেসবুকে দেখা মাত্র কোনো বিষয় নিয়ে অন্ধকারে ঝাঁপিয়ে পড়া যাবে না। আপনারা শিক্ষার্থীরা নিজেরা সচেতন না হলে আমাদের একার পক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীরা সমাজে আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। মাদকাসক্তিকে দেশের অন্যতম সমস্যা উল্লেখ করে মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, বর্তমানে অনেক ধরনের মাদক রয়েছে। এসব বিষয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে। আমাদের সবার দায়িত্ব মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। সবাইকে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স যুদ্ধ ঘোষণা করতে চাই। কেননা এ দেশকে টিকিয়ে রাখতে হলে সবাইকে সুনাগরিক হতে হবে। দেশের প্রকৃত সম্পদ হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে। সেটা হবে প্রকৃত শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষা। নীতি-নৈতিকতা ছাড়া আমরা কখনও প্রকৃত মানুষ হতে পারবো না।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা জরুরি। এক্ষেত্রে তাদেরই বড় ভূমিকা রাখতে হবে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভা করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে যেন কেউ না জড়ায় সেই বিষয়ে সতর্ক করে যাচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সকল প্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম চালানো হবে।
এতে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. শওকত হোসেন। ইন্সট্রাক্টর জান্নাতুন নারগিস ডেইজীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্যে রাখেন কলেজের চিফ ইন্সট্রাক্টর তাছলিমা আক্তার, ছাত্রলীগ নেতা শাহীনূর হোসেন রাব্বি, শিক্ষার্থী জান্নাতুল সাইমা তাসফি।