বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
কর্মচারি সমিতির কর্মসূচিতে অফিসার সমিতির হামলা!
#বিসিক ভবনে অপ্রীতিকর ঘটনা। #জাতির পিতার ছবি ভাংচুর।
আরিফুর রহমান
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৭:৫৭ পিএম আপডেট: ২৬.০৯.২০২৩ ৮:১৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

কথায় আছে ছবি কথা বলে। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে। বলছি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর কথা। সরকারী অফিসে গত ৩ আগষ্ট ২০২৩ তারিখে সংঘটিত ঘটনা ঘটে। যেখানে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও মহাসচিবের নের্তৃত্বে চলছে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু খচিত ব্যানার ভাংচুর, পায়ে মূড়ানো এবং লাঠি হাতে নিয়ে মারমুখী ভংগীতে কর্মকর্তা নামধারী কতিপয় লাঠিয়াল এর শিষ্টাচার বিবর্জিত কর্মকাণ্ড। অখিল রঞ্জন তরফদার, জি, এম, রব্বানী তালুকদার এবং সরোয়ার হোসেন এর অংশগ্রহনে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু খচিত ব্যানার ভাংচুর এবং কর্মচারী ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ এবং কর্মচারীদেরকে মারার উদ্দেশ্যে লাঠি হাতে এগিয়ে যাওয়ার ছবি। কোন সরকারী দপ্তরে যে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তা বা কর্মচারী শৃংখলা বিরোধী কোন কাজ করলে তার প্রতিকার করার বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের এখতিয়ার আছে কর্তৃপক্ষের। কর্মকর্তা সমিতির নের্তৃস্থানীয় কোন ব্যক্তির এ ধরনের এখতিয়ার নেই। একটি সরকারী অফিসে জয় বঙ্গবন্ধু খচিত ব্যানার ভাংচুর, পায়ে মূড়ানো এবং লাঠি হাতে নিয়ে মারমুখী ভংগীতে কর্মকর্তা নামধারী কতিপয় লাঠিয়াল এর শিষ্টাচার বিবর্জিত আচরণ পরিষ্কারভাবে অশুভ ইংগিত বহন করে। 

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত সূত্রে জানা গেছে, বিসিকে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রাণের দাবী বিসিকের নিজস্ব অর্থে বিসিকে পেনশন প্রবর্তন বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করা এবং যথাযথভাবে বাস্তবায়নের দায়-দায়িত্ব এতদসংক্রান্ত বিষয়ে গঠিত কমিটির সকল সদস্যের থাকলেও জি, এম, রব্বানী তালুকদার বিসিক কর্মকর্তা সমিতির মহা-সচিব নির্বাচিত হওয়ার পর ২০২২ সালের ২২ মে পেনশন বিষয়ক নথিটি তার নিজ জিম্মায় নেয়ার পর এ বিষয়ে কোন সভা আহবান করেনি। পেনশন প্রথা বাস্তবায়ন বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে এক কথায় বলে দিয়েছেন যে, আমাদের পেনশন প্রবর্তন ব্যবস্থা খুব ভাল অবস্থায় আছে। এটা নিয়ে কারো দুঃচিন্তা করার কোন কারণ নেই। একই কথা বিসিক কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের জবাবে বিভিন্ন সভায় ব্যক্ত করেছেন অখিল রঞ্জন তরফদার। 

বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাষ্টায়ত্ত প্রতিষ্ঠান-৩ অধিশাখার চলতি বছরের ৩০ জুলাই ০৭.০০.০০০০. ১২৮.৩৬. ০০২.২১.১৬ নং স্মারকের মাধ্যমে বিসিকের পেনশন কার্যক্রম প্রবর্তনে অসম্মতি জ্ঞাপন করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে একটি পত্র জারী করেছে। বিসিক কর্মকর্তা সমিতির সভাপতির দায়িত্বে থাকা বিসিকে পেনশন প্রথা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক বিসিক কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি অখিল রঞ্জন তরফদার চলতি বছরে অনুষ্ঠিত এক সভায় তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন যে, বিসিকে পেনশন প্রথা প্রবর্তন এর বিষয়টি প্রজ্ঞাপন জারীর অপেক্ষায় আছে। 

এ বিষয়টিতে মিথ্যাচার করেছেন এবং বিসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রাণের দাবীর সাথে প্রতারণামূলক আচরণ করার কারণে সৃষ্ট ক্ষোভ ও অসন্তোষের বহিঃ প্রকাশ ঘটানোর অংশ হিসেবে বিসিকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশ গ্রহনে বিসিক ভবনের নীচ তলায় জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু লিখা খচিত ব্যানার টাংগিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি, অফিস শুরুর প্রারম্ভে অফিসে আগত সকলস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উক্ত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন করে, যা বিসিক ভবনের নীচতলায় স্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা আছে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচী চলাকালীন বিসিকের একজন পরিচালকের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ সভায় অংশ গ্রহণকারী সকলকে যার যার দপ্তরে দপ্তরে চলে যান, বিষয়টি সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা আছে। 

প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ স্ব স্ব কর্মস্থলে গমনের কিছুক্ষণ পর বিসিক কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি অখিল রঞ্জন তরফদার, সহ-সভাপতি সরোয়ার হোসেন এবং মহাসচিব জি,এম, রব্বানীর নেতৃত্বে বিসিক কর্মকর্তা সমিতির কতিপয় নেতৃবৃন্দ ও শৃংখলা শাখার উপ-ব্যবস্থাপক  আসিফ উল হাসান, একই শাখার সম্প্রসারণ কর্মকর্তা  তাসনিম হায়দার, কর্মীব্যবস্থাপনা শাখার কর্মী ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন এবং মতিঝিলস্থ নকশা কেন্দ্রে কর্মরত উপব্যবস্থাপক  ফজলুর রহমানসহ আরো বেশ কিছু কর্মকর্তা নীচতলায় সমবেত হয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু খচিত টাংগানো ব্যানার লাথি মেরে ছিড়ে ফেলেন এবং লাঠি নিয়ে  ইউনিয়ন নের্তৃবৃন্দকে মারতে আসেন।  বিষয়টিও সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা আছে।  

পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী ঘটনাস্থলে আগমন করে প্রথমে বিসিক কর্মকর্তা সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে এবং পরে  ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করছিলেন। পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবীর ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাকালীন সময়ে বিসিক কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি অখিল রঞ্জন তরফদার মারমুখী ভংগিতে ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য কর্মচারীদেরকে মারার উদ্দেশ্যে তেড়ে আসেন, বিষয়টি সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা আছে। 

সম্প্রতি, সংঘটিত শিষ্টাচার পরিপন্থী ঘটনার তদন্ত কাজ সম্পাদনের জন্য বিসিক অফিস আদেশ স্মারক নং-৩৬.০২.০০০০.০০৩.১৮.০২৬.২৩/৭০৮২, তারিখ ৩ আগষ্ট ২০২৩ এর মাধ্যমে বিসিকের পরিচালক (অর্থ)-কে আহবায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটির কার্যপরিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন বিসিক চেয়ারম্যান বরাবরে দাখিল করবে। সে মোতাবেক কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার সময়সীমা ছিল ৮ আগষ্ট ২০২৩। উক্ত তদন্ত কমিটি অজ্ঞাত কারণে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি। যা নিয়ে বিসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে এক ধরনের আতংক দেখা দিয়েছে। একে অপরকে বলতে শুনা গেছে প্রকৃত অপরাধীদেরকে আড়ালে রেখে বা তাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আশংকা দেখা দিয়েছে। গঠিত কমিটির সদস্য সচিব শ্যামলী নবী বিসিক স্মারক নং-৩৬.০২.০০০০.০০৩.১৮.০২৬.২৩/৭১৫৫, তারিখ ১০ আগষ্ট ২০২৩ এর মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি জারী করে। তাতে উল্লেখ করে শিষ্টাচার লংঘন করে অফিসের কর্মপরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার কারণে ০৩-০৮-২০২৩ তারিখের ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য/বক্তব্য প্রদানে আগ্রহী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে ১০-০৮-২০২৩ হতে অফিস সময়সূচীর মধ্যে অনির্ধারিত সময়কালব্যাপী লিখিতভাবে অথবা সরাসরি উপস্থিত হয়ে মৌখিক বক্তব্য প্রদান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এটি ০৩-০৮-২০২৩ তারিখের জারীকৃত বিজ্ঞপ্তির সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং রহস্যজনক একটি বিজ্ঞপ্তি বলে মনে করছে বিসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন এবং এখতিয়ার বহির্ভূত কার্যক্রম, অশালীন ও অশোভন আচরণের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদেরকে শাস্তির আওতায় না এনে কোন কৌশলে তাদেরকে অব্যাহতি প্রদানের রাস্তা খুঁজে বের করা যায়-সে কাজটি করছেন তদন্ত কমিটি।  

জানা গেছে, পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী এর উপস্থিতিতে প্রশাসন বিভাগের শৃংখলা শাখার উপব্যবস্থাপক আসিফ উল হাসান, সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাসনিম হায়দার, কর্মী ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মী ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন কর্তৃক জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু খচিত ব্যানার ছেঁড়া, ব্যানার পায়ে মুড়ানো এবং লাঠি হাতে নিয়ে কর্মচারীদেরকে মারতে উদ্যত হওয়ার পরও তাদের স্বপদে বহাল রেখে দাপ্তরিক কার্য সম্পাদনই প্রমাণ করে ভিন্ন কিছুর।  যার দায়ভার পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী কোনভাবেই এড়াতে পারেন না। এক্ষেত্রে তিনি এবং বিসিক চেয়ারম্যান এখতিয়ার বহির্ভূত কার্যক্রম, অশালীন ও অশোভন আচরণের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদেরকে শাস্তির আওতায় না এনে অপেশাদারসুল্ভ মনোভাব প্রদর্শন করে দাপ্তরিক কার্য সম্পাদন করে চলেছেন। 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিসিক চেয়ারম্যান মুহ. মাহবুবর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠালে ফিরতি কোন জবাব দেয়নি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]