শনিবার মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশের মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড। যেখানে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৫৪ রান সংগ্রহ করে সফরকারীরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৬৮ রানেই গুটিয়ে যায় লিটন দাসের দল। এতে ৮৬ রানের জয় তুলে নিয়েছে কিউইরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন টাইগার ওপেনার লিটন দাস। কিন্তু ফিল্ড আম্পায়ার ইরাসমাসের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা পান টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কাইল জেমিনসনকে ডিপ থার্ড দিয়ে উড়ে মারতে গিয়ে রবীন্দ্রর তালুবন্দী হন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৬ রান করেন তিনি।
এরপর ক্রিজে আসেন তানজিদ হাসান তামিম। উইকেটে এসেই মাঠের চারপাশ থেকে রান তুলতে থাকেন তিনি। কিন্তু ম্যাচের ১১তম ওভারে ইশ শোধির লকি ফার্গুসনের তালুবন্দী হন জুনিয়র তামিম (১৬)। একই ওভারের শেষ বলে শোধিকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য (০)।
পরে উইকেটে আসেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই শোধির ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৪ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে টাইগাররা। তবে তামিম-রিয়াদ জুটিতে আশার আলো দেখে স্বাগতিকরা। তবে এ জুটিতে আঘাত হানেন ইশ শোধি। টাইগারদের সাবেক অধিনায়ককে তিনি টম ব্লান্ডেলের তালুবন্দী করেন। আউট হওয়ার আগে ৪৪ রান করেন তিনি।
এরপর উইকেটে থিতু হয়েও সাজঘরে ফেরেন শেখ মাহেদী (১৭)। তার বিদায়ে টাইগার ব্যাটাররা শুধু আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন। একে একে মাহমুদউল্লাহ (৪৯), হাসান মাহমুদ (০), নাসুম আহমেদ (২১) ও খালেদ আহমেদ (১) প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। এতে টাইগারদের ইনিংস থামে ১৬৮ রানে।
কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ছয় উইকেট শিকার করেন ইশ শোধি।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক লকি ফার্গুসন। পরে সফরকারীদের হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন উইল ইয়ং এবং ফিন অ্যালেন। ম্যাচের শুরু থেকে দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা দু’জন।
ম্যাচের তৃতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের স্বাদ দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ওভারের তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে লিটনের তালুবন্দী করে উইল ইয়ংকে সাজঘরে ফেরান ফিজ। আউট হওয়ার আগে ৮ বলে শূন্য রান করেন আগের ম্যাচে অর্ধ শতক পাওয়া ইয়ং।
উইলের বিদায়ে উইকেটে আসেন চাঁদ বোয়েস। এর পরেই কিউই শিবিরে ফের আঘাত হানেন ফিজ। এবার তার শিকার ফিন অ্যালেন (১২)। এরপর বাইশ গজে আসেন টম ব্লান্ডেল। তাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হেনরি নিকোলস। এ জুটির ব্যাট থেকে আসে ৯৫ রান। পরে ওডিআই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নেন ব্লান্ডেল।
ম্যাচের ২৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠা নিকোলসকে ফেরান খালেদ। সাজঘরে ফেরার আগে ৬১ বলে ৪৯ রান করেন নিকোলস। পরে ক্রিজে আসেন রাচীন রবীন্দ্র। তবে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই মাহেদীর ঘূর্ণিতে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন তিনি। এতে দুই বান্ডারিতে ১০ রানেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এ কিউই অলরাউন্ডার।
এরপর বাইশ গজে আসেন কোল ম্যাককোঞ্চি। এরপরই টম ব্লান্ডেলের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন হাসান মাহমুদ। বোল্ড হওয়ার আগে ক্যারিয়ার সেরা ৬৮ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে সফরকারীরা।
এরপর দলের হাল ধরতে উইকেটে আসেন ইশ শোধি। তাকে সঙ্গ দিয়ে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন ম্যাককোঞ্চি। ম্যাচের ৩৯তম ওভারের প্রথম বলে নাসুমের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউ হন তিনি। পরে আম্পারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানান তিনি। কিন্তু তাতে সুফল পাননি, এতে ২০ রানেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
এরপর উইকেটে আসেন কাইল জেমিনসন। দায়িত্ব নিয়ে দলীয় ইনিংস লম্বা করতে থাকেন তিনি। কিন্তু ম্যাচের ৪৫তম ওভারে শেখ মাহেদীর ঘূর্ণিতে তাকেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কাইল (২০)। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে শোধির ৩৫ রানের ক্যামিও ইনিংসে ২৫৪ রানে থামে সফরকারীরা।
এদিন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন শেখ মাহেদী।