শিক্ষা উপমন্ত্রী মহীবুল হাসান চৌধুরী এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি প্রেরণাদায়ী অঙ্গীকার হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ২০২১ সালে এ রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে বাংলাদেশ বিপ্লব সাধন করেছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ পরিণত করা। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সপ্তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটির চারটি অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএপ্রাপ্ত ১০ জন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আজ্জম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সনদ ও গোল্ড মেডেলপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহীবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এ দেশ ও সমাজ আজ আপনাদের এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। তাই দেশ ও সমাজের কাছে আপনারা ঋণী। আপনারা আপনাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও মনন দিয়ে দেশমাতৃকার কল্যাণ করতে পারলে সে ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কখনো হতাশ হবেন না, মনে সাহস রাখবেন। মনে রাখবেন, সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে হলে আপনাদের অধ্যবসায়, পরিশ্রম ও কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে।
সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, আজকের গ্র্যাজুয়েটরা আগামী দিনের প্রতিনিধিত্ব করবে। তাই ন্যয়, নৈতিকতা ও দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ^জিৎ চন্দ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি সফল গ্র্যাজুয়েট তৈরির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের ভিশন-২০৪১ পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে’।
তিনি বলেন, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ইউজিসির সব বিধি-বিধান মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা প্রশংসাযোগ্য। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আজ্জম বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে দেশ আজ যতটুকু এগিয়েছে, তার ভিত্তি রচিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে। তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চান সবার জন্য উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে। তাই একটি সুন্দর শিক্ষাকাঠামো বিনির্মাণে তিনি আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। সপ্তম সমাবর্তন সফলভাবে সম্পন্ন করতে ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারি, শুভানুধ্যায়ী প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন। সমাবর্তন গ্রহণকারীদের জীবনের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন তিনি।
এসময় বক্তব্য দেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার অধ্যাপক মো. শামসুল হুদা। সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় ২০১৯ সালের ফল সেমিস্টার থেকে ২০২৩ সালের স্প্রিং সেমিস্টার পর্যন্তসময়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নকারী ৩১০৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য। চারটি অনুষদ থেকে মোট ১০ জন শিক্ষার্থী এ বছর স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত হন। তাদের মধ্যে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল পান দুজন- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের আবদুল্লাহ আল আসিফ ও ব্যবসায় প্রশাসন (এমবিএ) বিভাগের ইসরাত জাহান সানা। তিনজনকে দেয়া হয় চেয়ারম্যানস গোল্ড মেডেল। তাঁরা হলেন- আইন বিভাগের মো. ওমর ফারুক, ইংরেজি বিভাগের নূর নাজলিমা জাহান ও এমবিএ’র মো. আমিনুল ইসলাম। চার অনুষদ থেকে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত পাঁচজন পান ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল। তাঁরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের আলিফ আল রহমান, বিবিএ’র নাদিয়া হোসেন উষা, সিএসই’র আবু রায়হান ভূঁইয়া, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের মারুফা ফেরদৌসি ও আইন বিভাগের তানভীর মাহতাব।
অনুষ্ঠানে শেষে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।