ডিমের পর এবার আলু আমদানির সুপারিশ করতে যাচ্ছে ভোক্তা অধিদপ্তর।জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত দর অনুযায়ী, ব্যবসায়ীরা আলুর দাম না কমালে সরকারকে আমদানির পরামর্শ দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বগুড়া জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এই সংকট নিরসনে আমরা কৃষিবিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে আলুর দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে। নাহলে আমদানির অনুমতি দিতে আমি সরকারের কাছে সুপারিশ করব।
শফিকুজ্জামান বলেছেন, আলু প্রচুর পরিমাণে মজুত আছে। আলুর কোনো ঘাটতি নেই। নতুন আলু উঠা পর্যন্ত ঘাটতি হওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই দাম বৃদ্ধিরও কারণ নেই। দালালরাই এগুলো মেকানিজম করছে। গত দেড় মাস ধরে আলুর বাজার অস্থিতিশীল রয়েছে। দেশের বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে দালালরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে আলুর দাম বাড়াচ্ছে। এই অপতৎপরতা থামাতে ও আলুর দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আমরা দেখবো এই সপ্তাহের মধ্যে সরকারের বেধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি হয় কি না। না হলে আমি সরকারের কাছে রিকমান্ড করবো। প্রয়োজনে বর্ডার (সীমান্ত) আলু আমদানির ক্ষেত্রেও খুলে দেওয়া হবে।
এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, আমরা জানি, আপনারাও জানেন বাজার ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। সেই বিশৃঙ্খলা দূর করার জন্য আজকে আমরা এখানে এসেছি। কোল্ড স্টোরে আলুর পাইকারি মূল্য ২৭ টাকা কেজি বিক্রি হলেই বাজারে ৩৫-৩৬ টাকা করে বিক্রি হবে। এর মধ্যে অন্য কোথাও সমস্যা হলে আমরা সেই জায়গায় হাত দেব।
পরিদর্শনের সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আর এন্ড আর পটেটো স্টোরেজ নামের হিমাগারে আলু মজুত এবং অতিরিক্ত মুনাফায় তা বিক্রির কিছু প্রমাণ পান। এ সময় ৩ ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- শিবগঞ্জের মোকামতলা ইউনিয়নের চাকলমা গ্রামের রিপন মিয়া (৩০), দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া গ্রামের শাহআলম (৫৮) ও পিরব ইউনিয়নের দাইমোল্লা গ্রামের জাহিদ হাসান (২২)। কোল্ড স্টোরেজ মালিক-ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি, সরকার নির্ধারিত আলুর মূল্য সম্বলিত ব্যানার টাঙানো, আলু ক্রয়-বিক্রয়ের পাকা রশিদ সংরক্ষণ এবং আলু কোথায় কার কাছে বিক্রি করা হচ্ছে তার তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সরকার দাম নির্ধারণ করার পরও বাজারে সেই দামে আলু না মেলার কারণ অনুসন্ধানে জেলার আরো হিমাগার পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শফিকুজ্জামান।
এদিকে, আজ বিকেল ৩টার দিকে হিমাগার মালিক ও আলুর খুচরা-পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
ডিসি অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, আমরা কৃষিবিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। আলুর দাম দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে আসবে। না হলে আমি সরকারের কাছে সুপারিশ করবো, বর্ডার দিয়ে কিছু আলু ইমপোর্টের পারমিট দেওয়ার জন্য।
বগুড়ার হিমাগার ও আলু ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজ থেকে আপনারা ২৭ টাকায় আলু বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরাও হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম ২৭ টাকা রাখার নিশ্চয়তা দেন।