রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে দীর্ঘ হচ্ছে আমের মৌসুম
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১০:২৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

আগাম জাতের আমের ভালো মুল্য না পাওয়ায় চাষিরা ঝুকছেন নাবী জাতের বাগানের দিকে। ইতিমধ্যে নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় কাটিমন, গৌড়মতি, আ্ম্প্রপালি সহ আরও কয়েক জাতের বড় বড় আম বাগান গত ১০ বছরে তৈরি করছেন  চাষিরা। আমের ভালো মুল্য না পাওয়ায় চাষিরা আধুনিক আম ব্যাবসার দিকে ঝুকে পড়ছে। এছাড়া শিবগঞ্জ উপজেলায় বড়ো বড়ো আম বাগান কেটে নাবী জাতের বাগান তৈরিতে ব্যাস্থ বাগান মালিকগন।

কৃষি বিভাগের মতে, গত ১০ বছরে নাচোল গোমস্তাপুর, ও শিবগন্জ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে নাবী জাতের বাগান তৈরি  হয়েছে। 

জানা গেছে আমের মিষ্টি ঘ্রাণ ও মধুর রসের অপেক্ষায় থাকে না এ দেশে এমন মানুষের সংখ্যা হয়তো হাতেগোনা। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে মাসের পুরোসময় জুড়ে চলে আম খাওয়া। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের স্বাদ এখন দেশের গণ্ডি পেরেয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রীষ্মের ফল আম। ষড়ঋতুর এই দেশে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ তথা গ্রীষ্মকালকে বলা হয় মধুমাস। চাঁপাইনবাবগঞ্জের  কড়া মাটির অন্যতম সেরা ফসল আম।

আমচাষিরা জানান, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের পর আষাঢ়-শ্রাবণেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম পাওয়া যেত। তবে সেই আম তেমন সুস্বাদু নয়। অনেকটা টক-মিষ্টি স্বাদের, নাম আশ্বিনা। সুস্বাদু না হলেও যারা আম পছন্দ করেন, তাদের কাছে আশ্বিনাও প্রিয়। এরপর আমপ্রেমীরা অপেক্ষায় থাকতেন পরের বছরের বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে মাসের জন্য। তবে প্রায় দেড়দশক ধরে আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ  অঞ্চলের এই চিত্র প্রায় পালটে গেছে। খেতে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের আমের মতো সুস্বাদু না হলেও এখনো গাছে এমনকি বাজারে রয়েছে আম্রপালি, গৌড়মতী বা বারি-১২ ও কাটিমন জাতের আম। অর্থাত্ আমের মৌসুম শেষ হয়েও যেনো শেষ হচ্ছে না।

চাষিরা আরো জানান, এখনো গাছে ও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এমন আমের একটি জাতের নাম গৌড়মতী বা বারি-১২। একেক এলাকার চাষিরা একেক নামে চেনেন এই আম। আশ্বিনা শেষ হওয়ার পরও গৌড়মতী ঝুলছে গাছে গাছে। গৌড়মতী ভাদ্র মাসজুড়ে পাওয়া যায়। এরপর প্রকৃতিতে নামে শীতের আমেজ। তখনো পাওয়া যায় আরেক জাতের নতুন আম, নাম ‘কাটিমন’। থাইল্যান্ডের এই আমের ফলন পাওয়া যায় বছরে তিন বার। চাঁপাইনবাবগন্জে সেপ্টেম্বর এর পর অক্টোবর-নভেম্বর মাসেও কাটিমন পাওয়া যায়। তবে এই জাতের আমের দাম স্বাভাবিক আমের মৌসুমের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।

কৃষিবিদেরা বলছেন, কয়েক বছর আগেও ল্যাংড়া ও ফজলির পর বাজারে তেমন সুস্বাদু আম পাওয়া যেত না। এখন লেট ভ্যারাইটিজ বারি-১২ বা গৌড়মতী এবং কাটিমন ছাড়াও পাওয়া যায় বারি-৩, বারি-৪, বারি-১১ এবং ভিনদেশি ব্যানানা আম, তাইওয়ান রেড ও কিউজাই। যদিও আমের মৌসুম দীর্ঘায়িত করতে এখন পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে  বড় ভূমিকায় রয়েছে গৌড়মতী এবং কাটিমন জাত। নাচোল  উপজেলার ফতেপুরে  ৭০ বিঘার বাগান করেছেন সেলিম চৌধুরী। তিনি কাটিমন ও গৌড়মতি  জাতের  গাছ লাগিয়েছেন  গত পাঁচ বছর আগে। তিনি  জানান এর আগে অল্প অল্প করে টাকা পেলেও চলতি বছর ৫০ লাখ টাকার আম বিক্রির আশা করছেন।ইতিমধ্যে ৩০ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন।

তিনি জানান, বছরে তিন বার ফলন পাওয়া যাচ্ছে কাটিমন জাতের বাগান থেকে। এবার আরো দেড় মাস পর তার বাগান থেকে আম উঠবে। এগুলো ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা মণ দামে বিক্রি হবে। এরপর অক্টোবর-নভেম্বরে আবার আম কাটিমন আম বিক্রি করা যাবে। তখন ১২ থেকে হাজার ১৬ হাজার টাকা মণ দামে আম বিক্রি করা যাবে। কাটিমন জাতের আমের ফলন কম হলেও দামে পুষিয়ে যায় বলেও জানান তিনি।

নাচোল সদর উপজেলার তালপুকুরে ২৫ বিঘা জমিতে দুইটি মিশ্র ফলের বাগান আছে রফিকুল ইসলাম।  বাগান দুটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গৌড়মতি ও ৫ হাজার কাটিমন জাতের আম গাছ রয়েছে। তিনি জানান, গত বছর ১২ হাজার টাকা মণ দামে এই আম বিক্রি করেছি। গৌড়মতি জাতের আম ল্যাংড়ার মতোই সুস্বাদু। গত শুক্রবার ঐতিহ্যবাহী কানসাট আম বাজারে গিয়ে দেখা যায় আশিনা,গৌড়মতি ও কাটিমন জাতের আম বিক্রি হচ্ছে। আশিনা আট হাজার টাকা মন ও কাটিমন ও গৌড়মতি দশ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি  করেছেন জনৈক শফিকুল  ইসলাম। তিনি জানান ফতেহপুর থেকে আম গুলো কিনে এনেছেন। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঢাকা স্টান্ড,ও রাজশাহী  বাসস্ট্যান্ডে কাটিমন আমের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন কয়েকজন যুবক।

নাচোলের আম চাষি বদরুদ্দোজা জানান, চলতি বছর তিনি ১ শত ৫০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানি করেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ মোখলেছুর রহমান জানান, ‘বর্তমানে আমের মৌসুম বড় ও দীর্ঘ হচ্ছে। আমের মৌসুমকে আরো দীর্ঘায়িত করতে গবেষণা চলছে। কাটিমন জাত নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন। তাহলে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসেও এই আম পাওয়া যাবে।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের ডি ডি ডঃ পলাশ সরকার  জানান, ‘ফলন একটু কম হলেও লাভ বেশি হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের  আমচাষিরা এখন লেট ভ্যারাইটিজ জাতের আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।’



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]