তবে সব অভিযোগ সত্য নয়, বরং এসব প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছেন সোহেল আহমদ বাহাদুর।
অন্যদিকে বাবা জেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি মোজাম্মেল হকের নাম ভাঙিয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে শহীদুল হক সোহেলও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়েছেন। কিন্তু সেভাবে সংগঠনের ভিত মজবুত করতে পারেননি। বলতে গেলে সভাপতি-সম্পাদক দুজনই নিজেদের আখের গুছিয়ে হাজার হাজার ত্যাগী নেতাকর্মীকে অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছেন। অবশ্য কক্সবাজার পৌর নির্বাচন ইস্যু নিয়ে সংগঠন থেকে বহিষ্কার হন সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সোহেল।
কক্সবাজারে যুবলীগের মতোই অবস্থায় রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। ২৮ জুলাই জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হলেও কাউন্সিল হয়নি। যুবলীগের পথ ধরেই কমিটির সিদ্ধান্ত কেন্দ্রে নিয়ে যান নেতারা। সভাপতি-সম্পাদক পদে নেতৃত্বপ্রত্যাশীদের কাছ হতে জীবনবৃত্তান্ত নেয়া হয়েছে সম্মেলন শেষে। এরপর থেকে পদপ্রত্যাশীরা ঢাকায় পড়ে রয়েছেন। একেকজন একেক নেতাকে ম্যানেজ (ব্যবস্থা) করার প্রণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকেই মোটা অঙ্কের টাকায় পদ পেতে দর কষাকষি করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, দেড় মাসেও আলোর মুখ দেখেনি জেলা কমিটি।
কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘গণতান্ত্রিক চর্চায় সম্মেলন ও কাউন্সিলে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে নেতা নির্বাচন জরুরি। এতে নেতত্ব পাওয়ার আশায় পদপ্রত্যাশীরা কর্মী সৃষ্টি ও যোগাযোগ বাড়াতো। কিন্তু টানা ১৫ বছর দল ক্ষমতায় থাকায় এই ধারার ব্যত্যয় ঘটছে তৃণমূলে।’
জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে জেলা থেকে তৃণমূল কোথাও আগের মতো সুসংগঠিত নেই আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এমন অবস্থাও শুনি সভাপতি-সম্পাদক ছাড়া কমিটির অন্যরা একে অপরকে চেনেও না-নেই চেইন অব কমান্ড। কিন্তু যার কাছ থেকে কমিটি মিলবে, সেই নেতাকে তোয়াজ করতেও ভোলেন না।’
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক দায়িত্বশীল এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ বলেন, ‘ছাত্রলীগ ও যুবলীগ জেলার দায়িত্বশীলদের স্বেচ্ছাচারিতা, প্রতিহিংসা, উচ্চাভিলাষ ও অদক্ষতার কারণে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ত্যাগী হাজারো নেতাকর্মী থাকা সত্ত্বেও সংগঠনগুলো আজ একপ্রকার অস্তিত্ব সংকটে।’
জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে জেলা যুবলীগ তার অতীত জৌলুস হারিয়েছে। ছাত্রলীগের অভিজ্ঞ ও ত্যাগীরা পরবর্তীতে যুবলীগের দায়িত্বশীল হতো। কিন্তু গতবারে ছাত্রলীগের কর্মীরা অবহেলিত হয়ে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ও যুবদল এমনকি ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাকর্মীরাও যুবলীগের দায়িত্বশীলদের পেছনে সার্বক্ষণিক থেকে নিজেদের যুবলীগ কর্মী পরিচয় দিয়েছে।’
আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘নানা কারণে অগোছালো হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠা কক্সবাজারের সাংগঠনিক কার্যক্রম গোছাতে উদ্যোগ চলছে। যুবলীগের নিবেদিতপ্রাণ, ত্যাগী, আদর্শিক ও স্বচ্ছ নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে শিগগিরই নতুন কমিটি ঘোষণা হবে।’