প্রকাশ: শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৮:২৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) এ এম আবদুল্লাহ নিজেকে ‘নিরাপত্তাহীন’ দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে আবদুল্লাহ গতকাল বুধবার তাঁর ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।
এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা। আসনটিতে এবার মনোনয়নপ্রত্যাশী এ এম আবদুল্লাহও। এ জন্য বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করছেন তিনি। বুধবার বিকেলে জনসংযোগে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হন।
সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লিখিত বক্তব্যে আবদুল্লাহ বলেন, এক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করছেন। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার একটি গাড়িবহর নিয়ে নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ হয়ে মাইজপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। শাহাবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া বাজারে পৌঁছানোর পর একদল সন্ত্রাসী অতর্কিত তাঁর গাড়ি এবং তিনিসহ অন্য ব্যক্তিদের ওপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা এসেই তাঁকে হামলার সময় অকথ্য গালাগাল দেয় এবং গাড়ি ভাঙচুর ও বহরে থাকা লোকদের পেটাতে থাকে।
আবদুল্লাহর দাবি, হামলার সময় তিনি দ্রুত গাড়ি চালিয়ে চলে আসার চেষ্টা করলে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল পেছনে পেছনে এসে আবার হামলার চেষ্টা চালায়। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কয়েকবার কোপানোর চেষ্টা করে। চায়নিজ কুড়ালের মাথা ভেঙে তাঁকে বহনকারী গাড়ির মধ্যে পড়ে। পরে তিনি নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। এরপর খবর পান, তাঁর গাড়িবহরের ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রায় ৫০ জন বিভিন্নভাবে তাদের মারধরে আহত হয়েছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমও আহত হয়েছেন বলে জানান আবদুল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে আক্ষেপ প্রকাশ করে আবদুল্লাহ আরও বলেন, ছাত্ররাজনীতিসহ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ও তাঁর পরিবার নানাভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মামলা–হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু আজ দল ক্ষমতায়। প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছর এ দেশ ও এ দেশের মানুষের জীবনমানে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। আগামী নির্বাচনে দল ও শেখ হাসিনাকে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারে গিয়ে হামলার শিকার হওয়া অকল্পনীয়।
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নড়াইল–২ আসনে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানান আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশার পর থেকে বর্তমানে সংসদ সদস্যের ফেসবুককেন্দ্রিক সমর্থকগোষ্ঠী তাঁকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছে; কটূক্তি ও মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। বর্তমান সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অন্য কেউ প্রার্থী হতে পারবে না—এটাই তাঁদের মূল বক্তব্য। এ ধরনের মানসিকতার প্রতিবাদ জানান আবদুল্লাহ। বলেন, এ রকম পরিস্থিতিতে তিনি নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ ওয়াহিদুজ্জামান বাচ্চু, উপজেলার নবগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন মোল্যা, আওয়ামী লীগ নেতা মুন্সী শরিফুল ইসলাম, খায়ের উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।