খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, মোংলা বন্দর বেচে থাকলে খুলনা সহ দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল বেচে থাকবে। দক্ষিনা লের প্রান কেন্দ্র হলো মোংলা সমুদ্র বন্দর, এ বন্দরকে যে কোন মুল্যে বাঁচিয়ে রাখা আপনার আমার সকলের দায়ীত্ব। তাই নিজের স্বার্থে আগামী প্রজন্মের জন্য বন্দর উন্নয়নে বাধা নয়, সহায়তা করুন। মোংলা বন্দর আছে বলেই আমাদের এ এলাকায় ব্যাপক মিল কল কারখানা হয়েছে। ইপিজেড, ইকোনোমিক জোন, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, খানজাহান আলী বিমান বন্দর, খুলনা-মোংলা রেল লাইন সহ বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপক কর্মযোগ্য হচ্ছে আমাদের দক্ষিনা লে। ফলে এখানাকার যুব সমাজের কর্মস্থল হয়েছে। আগামীতে এ অ লে কোন বেকার লোক থাকবে না যদি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় ক্ষমতায় আসেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ কথা বলেন।
১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ড্রেজিংয়ের বালু ডাম্পিং করার লক্ষে জায়গা অধিগ্রহনের জন্য নতুন করে উদ্দ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাই জমির মালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা আর বন্দরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিয়ে এক জরুরী মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী। মঙ্গলবার দুপুরে বন্দরের সভা কক্ষে এ মত বিনিময় সভার আয়োজ করা হয়।
বন্দর সুত্রে জানা যায়, বন্দর চ্যানেলে বালু পরে ভরাট হওয়ায় ৯০ দশক থেকে মোংলা বন্দরে দেশ-বিদেশী জাহাজ আসা-যাওয়ায় বিঘœ সৃস্টি হয়। পরে মোংলা বন্দরকে মৃত বন্দরে বলে ঘোষনা দিয়েছিল ততকালীন সরকার অর্থাৎ জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের বন্দর মন্ত্রী। পরে ৯৬ সালের পর বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ বন্দরকে উন্নয়নের পরিকল্পনা করে। তাই নতুন করে মোংলা বন্দর চ্যানেলকে সচল করার জন্য উদ্দ্যোগ নেয় সরকার। সে সময় থেকে সল্প সময়ের জন্য কিছুটা ড্রেজিং হলেও ২০২০-২১ অর্থ বছরের ৭শ কোটি টাকা ব্যায় আউটার বার ড্রেজিং শুরু করা হয়। সেটি শেষ হলে পরে ২০২১-২২ অর্থ বছরে আরো একটি ইনার বার নামের প্রকল্প গ্রহন করে সরকার, যার ব্যায় ধরা হয় ৭শ ৯৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১৩ মার্চ। তাই প্রকল্পের বালু ডাম্পিংয়ের জমি নির্ধারণ করা হয় প্রায় ১৫শ একর। পরে জমি অধিগ্রহন ও ডাইক নির্মান করতে গিয়ে বিভিন্ন বাধার মুখে করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কাজ শুরুর কিছু দিন যেতে না যেতেই বালু ফেলতে না পেরে প্রকল্পটি প্রায় বন্ধের পথে। তাই নতুন করে বালু ফেলার জন্য মোংলা উপজেলার চিলা, জয়মনি, কাইনমারী, বুড়িরডাঙ্গা ও শানবান্ধা এলাকায় নতুন করে আরো ৮শ ৬২ একর জমি অধিগ্রহনের উদ্দ্যোগ নিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর এক জরুরী মতবিনিময় সভার আয়োজন করেণ বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পরে এ সকল জমির মালিকদের নিয়ে আলোচনা করেণ বন্দর চেয়ারম্যান ও সিটি মেয়র তালুকদার আঃ খালেক। পরে তাদের জমি অধিগ্রহন (হুকুম দখল) করার জন্য সকল কিছু আলোচনা সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং পরবর্তিতে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে তাদের জমির হুকুম দখলের টাকা পরিশদের দিন ধার্য়্যয়ের সিদ্ধান্ত করা হবে বলে জানায় বন্দর চেয়ারম্যান।
এসময় বাগেরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরবিন্দু বিশ্বাস, মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র শেখ আঃ রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাস, সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ হাবিবুর রহমান, থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ সামসুদ্দিন, বন্দরের পরিচালক প্রশাসন মোঃ শাহিনুর রহমান, ড্রেজিং প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শওকাত হোসেন সহ উর্ধতন কর্মকর্তাগন, স্থাস্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও জমির মালিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।