প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৯:৩৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সন্তান জন্ম দেওয়ার পরের দিন হাসপাতালে বসেই এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের খাদিজা আক্তার।
প্রসব ব্যথা নিয়ে রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার সময় শরীয়তপুর স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি হন খাদিজা আক্তার। পরের দিন সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন খাদিজা। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও মনের জোর নিয়ে হাসপাতালের বেডে বসে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। আজ ছিল তার পৌরনীতির প্রথম পত্র পরীক্ষা। জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় অসুস্থ থাকার পরেও মনের সাহস নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। তবে হাসপাতালের বেডে থেকেই তার আর একটা পরীক্ষা দিতে হবে। সন্তান গর্ভে নিয়ে আগের পরীক্ষাগুলো পরীক্ষা কেন্দ্রেই দিয়েছেন খাদিজা আক্তার। হসপিটালে পরীক্ষার হলে তত্ত্বাবধানে রয়েছেন একজন শিক্ষক ও একজন পুলিশ সদস্য । খাদিজা আক্তারের স্বামী মোঃ ফরহাদ হোসেন একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। তিনি গাজীপুরে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন।
পরীক্ষাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাই সন্তান গর্ভে নিয়ে এত কষ্ট করে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি।
খাদিজা আক্তারের স্বামী ফরহাদ হোসেন জানান, ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয় খাদিজার। ২০২১ সালে শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করার পর শরীয়তপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন খাদিজা। গত আগস্ট মাসের ১৭ তারিখে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলে খাদিজা পরীক্ষায় অংশ নেন। শরীয়তপুর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৯টি পরীক্ষা শেষ করেন খাদিজা। সবশেষে গত ৭ সেপ্টেম্বরও কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। এরপর ১০ তারিখে অসুস্থ হয়ে পড়লে খাদিজাকে শরীয়তপুর স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার সময় ডা. রেজওয়ানা ইসলাম তমার তত্ত্বাবধানে সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন খাদিজা। সন্তান জন্মের পর স্বাভাবিকই ছিলেন খাদিজা।
ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, আমার পরিবার ও খাদিজার বাবার বাড়ি সহযোগিতায় পরীক্ষা চালিয়ে গেছে খাদিজা। পরীক্ষাগুলো পরীক্ষা কেন্দ্রে দিয়েছিল। সোমবার হসপিটালে বাচ্চা সিজারের মাধ্যমে হওয়ার পরে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে হাসপাতালে বসে পরীক্ষা নেয়ার আবেদন করি। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক হসপিটালে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এজন্য আমরা জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই। খাদিজা যে পর্যন্ত পড়াশোনা করতে চায় আমরা তাকে সে পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ দেব। এ্যাডভোকেট হওয়ার ইচ্ছা আছে খাদিজার।