বুধবার যখন এ তালিকা প্রকাশিত হয়, তখন আজিজ খানের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি ডলার। আজ এ প্রতিবেদন লেখার সময় অবশ্য তাঁর সম্পদের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। ‘ফোর্বস’ সাময়িকীর তথ্যানুসারে, আজ আজিজ খানের সম্পদের পরিমাণ ১১০ কোটি ডলার, অর্থাৎ দুই কোটি ডলার কমেছে।
‘ফোর্বস’–এর ২০২২ সালের সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীর তালিকায় আজিজ খানের অবস্থান ছিল ৪২ নম্বরে। সেবার তাঁর সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে চলতি বছর ধনীদের তালিকায় আজিজ খান এক ধাপ এগিয়েছেন এবং তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১২ কোটি ডলার।
সিঙ্গাপুরের জন্য করা তালিকায় মুহাম্মদ আজিজ খানের অবস্থান ৪১তম হলেও ‘ফোর্বস’–এর করা বিশ্বের শতকোটিপতিদের তালিকায় তাঁর স্থান দেখানো হয়েছে ২৫৪০তম। এ অবস্থানে তিনি অবশ্য আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আছেন।
২০২১ সালে আজিজ খানের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৯ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৯ সাল থেকে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এরপর ২০২২ সালে তাঁর সম্পদের পরিমাণ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। ফলে তিনি ‘ফোর্বস’–এর বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতিদের তালিকায়ও স্থান পান।
‘ফোর্বস’ জানিয়েছে, ২০১৯ সালে মুহাম্মদ আজিজ খান জাপানি প্রতিষ্ঠান জেরার কাছে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের ২২ শতাংশ শেয়ার ৩৩ কোটি মার্কিন ডলারে বিক্রি করে দেন। সেই বিক্রয়মূল্যের ওপর ভিত্তি করে তখন সামিট পাওয়ারের বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশের নাগরিক ৬৮ বছর বয়সী আজিজ খান এক যুগের বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা। বিদ্যুৎ, বন্দর, ফাইবার অপটিকস ও আবাসন খাতের ব্যবসা আছে সামিট গ্রুপের এবং তাদের সব সম্পদ বাংলাদেশেই রয়েছে।
সামিটের অধীন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতের যত ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর হোল্ডিং কোম্পানি সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল।
সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত। সে জন্য বাংলাদেশে ব্যবসা করলেও এ কোম্পানির সম্পদের হিসাব করা হয় সিঙ্গাপুরে। ‘ফোর্বস’ জানাচ্ছে, মুহাম্মদ আজিজ খানের কন্যা আয়েশা খান বর্তমানে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনা করেন।
মার্কিন এ সাময়িকীর তালিকায় আজিজ খানের যে পরিচিতি দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, তিনি তিন সন্তানের পিতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে তিনি মাস্টার্স করেছেন।
তবে গত বছর ‘ফোর্বস’–এর ধনীদের তালিকায় ৪২তম স্থানে তাঁর নাম আসার পর সামিট গ্রুপের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ‘ফোর্বস’ মুহাম্মদ আজিজ খানের যে সম্পদের হিসাব দিয়েছে, সেটি শুধু বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসার সম্পদের হিসাব। এর বাইরে সামিটের অন্যান্য খাতের ব্যবসার সম্পদের হিসাব সেখানে যুক্ত হয়নি।
জানা যায়, সামিটের যাত্রা শুরু হয় ট্রেডিং কোম্পানি হিসেবে। পরে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবসায় এসে ভালো করে প্রতিষ্ঠানটি। বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসায় তাদের দ্রুত অগ্রগতি হয়। ১৯৯৮ সালে সামিটের প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে যায়।