ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এর কমপ্লায়েন্সের সাথে সমন্বয় করে দেশে ভ্যাট, ট্যাক্স এবং ইউটিলিটি চার্জ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি- এফবিসিসিআই।
বৃহস্পতিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- বিডার কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
স্থানীয় শিল্পের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, কাঁচামাল এবং প্রযুক্তি সহজলভ্যকরণ, লজিস্টিক্স এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ, অভ্যন্তরীণ খনিজ সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণসহ সব ধরণের নীতিগত এবং কারিগরী সহযোগিতা আরও বাড়াতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
টেকসই শিল্প সম্প্রসারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ- বেজা এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে সংযোগ আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, “বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক স্থান বরাদ্দ রাখা যেতে পারে। এখানে অভ্যন্তরীন সুযোগ সুবিধা আরও বাড়ানো দরকার। স্টার্টআপকে উৎসাহিত করতে বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশনের সাথে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।“
সৌজন্য সাক্ষাত কালে আন্তর্জাতিক মানের ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার স্থাপন, পূর্বাচলে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণ, পুরান ঢাকায় এফবিসিসিআই কার্যালয় চালু, বিভাগীয় চেম্বারসমুহের জন্য পৃথক ডেস্ক চালু, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশনসহ সকল সদস্যদের সংযুক্ত করাসহ এফবিসিসিআই‘র ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
এসময়, এফবিসিসিআই‘র সহসভাপতি খায়রুল হুদা চপল, শমী কায়সার, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী (রনি), যশোদা জীবন দেবনাথসহ পরিচালকবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে গতিশীল এবং সহজীকরণে আন্তঃবাণিজ্য নীতিমালা প্রণয়ন, পর্যটন খাতের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, দেশে ইলেক্ট্রনিক পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক মুক্ত সুবিধা দেয়া, আইসিটি পণ্য আমাদানিতে শুল্ক হ্রাস, ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাবে এনবিআর এর প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ, এনবিআরের কর ব্যবস্থাপনাকে অটোমেশন করাসহ বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধারেন তারা।
দেশে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ উন্নত করতে বেসরকারি খাতের সাথে সরকার আরও নিবিড়ভাবে কাজ করবে বলে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
তিনি বলেন, কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে আমাদের অর্থনীতি ভালোভাবেই অগ্রসর হচ্ছিলো। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বজায় রাখতে সরকার এরই মধ্যে বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যেখানে বেসরকারি খাতকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। এসময় নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উদ্ভাবনী কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে সামনের দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।