প্রকাশ: শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৯:৪৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নাটোরের গুরুদাসপুরে চতুর্থ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন ১০মাস আগে। প্রতিবেশী দুসম্পর্কের অভিযুক্ত নানা জাহিদুল খাঁ (৫০) ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগাড়ে রয়েছে সপ্তাহ খনেক হলো।
শনিবার (২ সেপ্টম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গুরুদাসপুর স্ব্যাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারের মাধ্যমে সেই অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রীর কোল জুড়ে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। বাঁচ্চাটিকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতার ভির জমেছে গুরুদাসপুর হাসপাতালে।
গুরুদাসপুর স্ব্যাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিশেজ্ঞ ডাক্তার নারগিস তানজিমা ফেরদৌস ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডঃ মোজাহিদুল ইসলাম জানান, স্কুল ছাত্রীটি ছোট থাকায় মা ও নবজাতককে বাঁচানো নিয়ে টেনশানে ছিলাম। যাই হোক অবশেষে সফল অস্ত্র পাচার হয়েছে। মা ও নবজাতক সুস্থ্য রয়েছে।
ওই স্কুল ছাত্রীর দাদী হালিমা খাতুন(৬০) জানান, আমি গরিব মানুষ অন্যের বাড়িতে কাজ করে অতি কষ্টে সংসার চালাই। আমাদের কষ্টের কথা ভেবে প্রয়াত স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস ১৫দিন আগে ২০হাজার টাকা দিয়ে ছিলেন। এগুলো দিয়েই ওর সেবা করেছি। এখন নানা চিন্তা আমাকে আঁকড়ে ধরেছে। কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। নবজাতকটিকে যদি কেই দত্তক নিতো তাহলে কিছুটা হলেও সস্তি পেতাম।
উল্লেখ্য, সংসারে পারিবারিক কলহের কারণে শিশুটির বাবা-মার সংসার ভেঙে যায়। পরবর্তীতে বাবা ও মা অন্যত্র বিয়ে করে। এরপর থেকে শিশুটি তার নানীর কাছে থাকতো। এলাকার এক দুসম্পর্কের নানা জাহিদুল খাঁ মাঝে মধ্য শিশুটিকে নিয়ে তার ভ্যানে করে স্কুলে আনা নেওয়া করতো। পরে ৫ মাস পর শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের মানুষ জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয়নি শিশুটি। তবে পরীক্ষা করার পর গর্ভে সন্তান থাকার কথা জানতে পারে পরিবার। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার মাধ্যমে চিকিৎসক অন্তঃসত্ত¦ার বিষয়টি জানাযায়। পরে শিশুটি এ ঘটনা তার পরিবারকে খুলে বলে। পরে গত ১৮ জুন শিশুটির দাদী হালিমা খাতুন বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ সময় পরে গত (২৬ আগস্ট) সকালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-৫ এর অধিনায়ক ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার হেলে া এলাকা থেকে ধর্ষক জাহিদুল খাঁকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়া জাহিদুল খাঁ গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের মৃত্য কালু খাঁর ছেলে।
ওই শিশুটি জানায়, অনেক আগে থেকেই তাকে আদর করতেন নানা জাহিদুল ইসলাম। বিভিন্ন সময়ে খাবার জিনিস কিনে দিতেন। প্রায়ই তার ভ্যানযোগে তাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। ঘটনার দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য গোসল করে বাড়ির ভেতর কাপড় পরিবর্তন করছিল শিশুটি। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ধর্ষক জাহিদুল ইসলাম বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে কাপড় পরিবর্তন করতে দেখেই পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরে মুখে গামছা পেঁচিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। ফলে ওই ঘটনা কাউকে বলতে সাহস পায়নি শিশুটি।