অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে বিশ্বের ১৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাম্প্রতিক বিবৃতির পর পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বিবৃতিতে বিচার স্থগিত চাওয়া বিচার বিভাগের ওপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে বিশ্বের ১৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাম্প্রতিক একটি বিবৃতি বা চিঠি বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের অভিমত হলো, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং সবকিছু আইন অনুসারে পরিচালিত হয়। স্বাধীন বিচার বিভাগ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং এক্ষেত্রে কারো কোনও হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ অনুসারে, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা এবং স্বাধীন। অর্থাৎ বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে, নির্বাহী বিভাগ এখানে কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। বাংলাদেশের সংবিধানে, এদেশের সকল নাগরিকের যেমন আইনের আশ্রয় গ্রহণের অধিকার রয়েছে, তেমনি আইনের প্রয়োগ সকল নাগরিকের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আমরা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করছি যে, দেশে আইনের শাসন বিদ্যমান এবং কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগকে না জেনে, যথাযথ পর্যালোচনা না করে অযাচিতভাবে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে বিবৃত্তি বা চিঠি প্রদান ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ও দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং বিচার বিভাগের ওপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ, যা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ বিশ্বাস করে যে, বিবৃতি বা চিঠি প্রদানকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাদের বিভ্রান্তিমূলক ও অজ্ঞতাপ্রসূত মতামত প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের মতো স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি এবং ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান উপাচার্যদের পক্ষে বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠান।