প্রতিপক্ষ নেপাল বলেই জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে ব্যাটিংয়ে বাজে শুরুতে শঙ্কা জেগেছিল পাকিস্তানের। শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর অবশ্য অধিনায়ক বাবর আজম ও ইফতিখার আহমেদের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। এরপর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নেপালিদের বিপক্ষে বড় জয়ে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করল ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে এক নম্বর দলটি।
এদিনে টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছেন নেপালের দুই ওপেনার কুশাল ভুরটেল ও আসিফ শেখ। অধিনায়ক রোহিত পৌডেলও বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। ইনিংসের প্রথম ওভারে বিদায় নেন কুশাল ও রোহিত। দলীয় ১০ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় নেপাল। কুশাল করেন ৮ রান অন্যদিকে নেপালের অধিনায়ক রোহিত শূণ্য রানে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন।
ওপেনার আসিফও বেশি রান করতে পারেননি। দলীয় ১৪ রানের মাথায় নাসিম শাহ বলে ইফতিখার আহমেদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাজঘরে ফিরেন তিনি। নেপালের এই ওপেনার করেন ৫ বলে ৫ রান। তবে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে নেপালকে কিছুটা টেনে তুলে নেয়ার চেষ্টা করেন দুই ব্যাটার আরিফ শেখ ও সোমপাল কামি। দুই জনে মিলে গড়েন ৭৮ বলে ৫৯ রানের বড় জুটি। সেই জুটিতে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করে নেপাল।
৩৮ বলে ২৬ রান করা আরিফকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন রউফ। একপ্রান্ত আগলে রাখা কামিকেও আউট করেছেন রউফ। আউট হওয়ার আগে নেপালের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ বলে ২৮ রানের ইনিংসটি আসে তার ব্যাট থেকে।
৩৮ বলে ২৬ রান করা আরিফকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন রউফ। একপ্রান্ত আগলে রাখা কামিকেও আউট করেছেন রউফ। আউট হওয়ার আগে নেপালের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ বলে ২৮ রানের ইনিংসটি আসে তার ব্যাট থেকে।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। এদিন স্বাগতিকদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ফখর জামান ও ইমাম-উল-হক। ম্যাচের শুরু থেকেই হাত খুলে ব্যাট করেন ফখর। অন্যদিকে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন ইমাম।
ম্যাচের পঞ্চম ওভারে সোমপাল কামির ফুল ওয়াইড লেংথের বলটি খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ইমাম। কিন্তু সেই সুযোগটি হাতছাড়া করেন নেপাল ফিল্ডার। তবে সাফল্য পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি নেপালকে।
ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে ফখর জামানকে করন কেসির তালুবন্দী করেন আসিফ শেখ। এতে উড়তে থাকা ফখরের ইনিংস থামে ১৪ রানে।
এরপর বাইশ গজে আসেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। ইমামকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নেন তিনি। কিন্তু নেপালের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খানিকটা চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই সোমপাল কামির দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউটের শিকার হন ইমাম। এতে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। রান আউট হওয়ার আগে এক বাউন্ডারিতে ৫ রান করেন তিনি।
ইমামের বিদায়ে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তাকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানকে চাপমুক্ত করেন বাবর আজম। কিন্তু ম্যাচের ২৪তম ওভারে উড়তে থাকার রিজওয়ানকে থামান সন্দ্বীপ লামিচানে। কভার থেকে নন স্ট্রাইকার প্রান্তে দুর্দান্ত থ্রোতে রিজওয়ানকে রান আউট করেন সন্দ্বীপ। এতে ৪৪ রানেই থামতে হয় পাকিস্তানের এ টপ অর্ডারকে।
এরপর বাইশ গজে আসেন আগা সালমান। তবে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই লামিচানের বলে শর্ট থার্ডে ভুরটেলের তালুবন্দী হন তিনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে পাকিস্তান।
তবে বাবর-ইফতিখার জুটিতে বিপদমুক্ত হয় পাকিস্তান। ম্যাচের ৪২তম ওভারের প্রথম বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তু্লে নেন ইফতিখার। এরপরের বলেই ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরির দেখা পান পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।
এরপর দুইজনে ধীরে ধীরে নেপালি বোলাদের মোকাবেলা শুরু করেন। দেখেশুনে খেলে দুইজনের ব্যাটে ৩০০শত রান পার করে পাকিস্তান। এ সময় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়বারের মতো দেড়শত রানের মাইলফলক র্স্পশ করেন বাবর। মাত্র ১২৯ বলে ১৫০ রান করেন তিনি। অন্যদিকে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছালেন ইফতিখার আহমেদ। মাত্র ৬৭ বলে ১০০ রান পূর্ণ করলেন পাক এই ব্যাটার।
খেলার ৪৯তম ওভারে বাবর আউট হলে মাঠে নামেন শাদাব খান। তাদের দুইজনের জুঁটিতে নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৪২ রান তুলে পাকিস্তান ক্রিকেট দল।
নেপালের হয়ে দুই উইকেট নেন সোমপাল কামি। আর একটি করে উইকেট নেন কারান এলসি ও সন্দ্বীপ লামিচানে।