সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত একটি মহল। নামে বেনাম বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে তাকে নাজেহাল করার পায়তারা চালাচ্ছে একটি চক্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাওবো কেন্দ্রিক একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট আছে যাদের প্রধান কাজ অফিসারদের ফাঁদে ফেলে কাজ হাতিয়ে নেওয়া। কর্মকর্তারা আরো জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ বুঝে নিতেন পাশাপাশি তিনি সাতক্ষীরা পওর-১ এর দায়িত্ব পালন কালে কোন সময় সিন্ডিকেট কে প্রাধান্য দেননি যার কারনে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট তার পিছনে উঠে পড়ে লেগেছে। সিন্ডিকেট তাদের ফায়দা লুটতে না পেরে নির্বাহী প্রকৌশলী বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে নেতিবাচক কাজ করে চলছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বর্তমানে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন সার্কেল বাপাউবোতে কর্মরত মোঃ আবুল খায়েরের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ হলে তিনি জানান, আমি দীর্ঘ চার বছর যাবত সুনামের সাথে সাতক্ষীরায় দায়িত্ব পালন করেছি। আমার সময়ের প্রতিটা কাজ আমিসহ আমার অফিসের কর্মকর্তারা সঠিকভাবে বুঝে নিয়েছি। আমি কোন বিশেষ গোষ্ঠিকে অবৈধ সহযোগিতা দেইনি যার কারণে একটি দুষ্টু চক্র আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। সংঘবদ্ধ চক্রটি আমার নামে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও নানা কুৎসা রটনা করে নামে বেনামে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে চলেছে এই চক্রের কারনে আমি অতিষ্ঠ।
নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের আরো জানান, চক্রটি যেসব অভিযোগ করেছে তার মধ্যে অভিযোগসমুহ মূলত ফনি আমপান পরবর্তী জরুরি আপদকালীন কাজ নিয়ে, সদর উপজেলার বাকাল চর বালিকা ও বলদ-ঘাটা নামক স্থানের বাঁধের কাজ ও মরিচ্চাপ নদীর ৪ কিলোমিটার হতে ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত পুন: খনন কাজের ঘাষ ও গাছ লাগানো নিয়ে।
আমপানের পরে সাতক্ষীরার অবস্থা কত ভয়াবহ হয়েছিল তা কেবল ওই সময় যারা শ্যামনগর ও আশাশুনির অবস্থা দেখেছেন তারাই অনুধাবন করতে পারবে। আশাশুনি ও গাবুরাতে কাফনের কাপড় পরে স্থায়ী বেড়ীবাধের জন্য সমাবেশ করেছিল স্থানীয়রা।
করোনার মত ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নির্বাহী প্রকৌশলী, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, শাখা কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পর্যায়ে লোকজনকে সাথে নিয়ে জীবন বাজি রেখে বাঁধ মেরামতের কাজ করা হয়েছে । চক্রটি এভাবে মিথ্যা অভিযোগ করে ভালো কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে, সেই সাথে অফিসারদেরকে ব্ল্াকমেইল করে চলছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, যেখানে আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাধ মেরামত করতে সময় লেগেছে প্রায় তিন বছর সেখানে সাতক্ষীরা পওর-১ বিভাগের এর অধিনে আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়েছে মাত্র এক বছরে। যেখানে কর্মকর্তারা প্রশংসার দাবিদার সেখানে এই গ্রুপটি কর্মকর্তাদের নানাভাবে হয়রানি করে চলেছে। চক্রটি সদর উপজেলার বাকাল, চর বালিথা ও বলদঘাটা নামক স্থানে বাঁধের কাজ নিয়ে অভিযোগ করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে যে নির্বাহী প্রকৌশলী বিল প্রদান করে প্রায় দুই কোটি টাকা ঠিকাদারের কাছ থেকে গ্রহণ করেছে।
অভিযোগ পত্রে দেখা যায় কাজে সাইনবোর্ডের যে সকল তথ্য থাকে সে সকল তথ্য অর্থাৎ কাজের নাম ঠিকাদারের নাম চুক্তিমূল্য এসব তো সন্নিবেশে দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, ঠিকাদারের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা গ্রহণ করে তাহলে উপপ্রকৌশলী ও প্রকৌশলী ও শাখা কর্মকর্তা ২ কোটি টাকা করে নেয় তাহলে অভিযোগকারীর ভাষ্যমতে মাঠ পর্যায়ে তিন প্রকৌশলী ছয় কোটি টাকা গ্রহণ করেছে।
ঠিকাদার যদি ৬ কোটি টাকা অফিসকে প্রদান করে তাহলে তার ও ছয় কোটি টাকার পাওয়ার কথা। ঠিকাদার তো নিজের পকেট থেকে টাকা প্রদান করবে না। কিন্তু ঐ কাজের চুক্তি মূল্য ৫ কোটি ৪৬লাখ । যদি ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকারও বিল প্রদান করা হয় সেক্ষেত্রে তার নিজের প্রফিট বাদ দিয়ে ঠিকাদারকে সম্পূর্ণ বিল করলে ঠিকাদার পাবে ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আর অভিযোগকারীর ভাষ্য মতে ঠিকাদার অফিসে প্রদান করেছে ৬ কোটি টাকা যা পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই না।
এব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।