সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের অনলাইনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারের বৈধতা নিয়ে করা রুল শুনানির সময় বিএনপিপন্থি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলো ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই বিচারপতি এজলাস ছেড়ে চলে যান।
সোমবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি-বিটিআরসিকে বক্তব্য প্রচার বন্ধে নির্দেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ রাজা ও সানজিদা খানম। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আর বিএনপির আইনজীবী ছিলেন এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দস কাজল।
এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, তারা বিচারপতি মো. খায়রুজ্জামানের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছেন, তাই তিনি শুনানি করতে পারবেন না। তারা ‘সেইম সেইম’ বলে চিৎকার করেন। এ সময় আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের হট্টগোলের প্রতিবাদ করলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
গত ১৩ আগস্ট তারেক রহমানের সংশোধিত ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। ওই নোটিশ জারির পর অনলাইন থেকে তারেক রহমানের বক্তব্য সরাতে আবেদন করেন রিট আবেদনকারী। এরপর সোমবার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
জানা যায়, রুল শুনানির জন্য সেকশন থেকে যে নোটিশ পাঠানো হয়, সেখানে তারেক রহমানের ঠিকানা ভুল লেখা হয়েছে। রোড নম্বরের জায়গায় রুম নম্বর হয়েছে। এরপর সংশোধিত ঠিকানা জমা দেন রিটকারীরা।
এর আগে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটে কোনো পত্রিকা, ইলেট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য প্রকাশ, প্রচার, সম্প্রচার, পুনঃউৎপাদন না করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তথ্য সচিবের প্রতি নির্দেশনা চেয়েছিলেন।
রিটে বলা হয়, তারেক একজন ফেরারি আসামি। তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করে ও বেআইনিভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন। একজন ফেরারি আসামির বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচার হতে পারে না। যাকে আদালত খুঁজে পাচ্ছেন না, তার বক্তব্য প্রচারযোগ্য নয়।
পরদিন রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তারেকের বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রুল জারি করেন।
রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে সেই দিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন (প্রয়াত), অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম (বর্তমানে মন্ত্রী), অ্যাডভোকেট এস এম মুনীর (বর্তমানে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল), অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম (তৎকালীন এমপি)। সম্প্রতি এই রুল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয় রিটকারী পক্ষ।
ভোরেরপাতা/এফ