প্রকাশ: সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩, ২:৫২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
প্রায় এক দশক পর ফের রাজনীতির আলোচনায় সিঙ্গাপুর। ২০১৩ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির তৎকালীন চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সিঙ্গাপুর সফরকে কেন্দ্র করে রাজনীতির আলোচনায় উঠে এসেছিল সিঙ্গাপুর। এবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু ও খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেয়াকে কেন্দ্র করে এমন আলোচনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রশ্ন, ষড়যন্ত্র করতে তারা সেখানে অবস্থান করছেন কী না।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সংসদের বিরোধী দলের মহাসচিব ও রাজপথের বিরোধী দলের মহাসচিব দেশের বাইরে কোনো বৈঠকে মিলিত হয়েছেন বলে কেউ কেউ দাবি করছেন। তবে জাতীয় পার্টির একটি সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বর্তমানে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন। অবশ্য সিঙ্গাপুর থেকে থাইল্যান্ডের দূরত্বকে বড় করে দেখতে চান না ওই আলোচকরা।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এখন দেখলাম বিএনপির তিন নেতা সিঙ্গাপুর গেছেন। পত্রপত্রিকা লিখছে এটা কি আদৌ চিকিৎসা নাকি আরও কোনো ষড়যন্ত্র করার উদ্দেশ্যে তাদের তিন নেতা একই সঙ্গে সিঙ্গাপুর গেলেন। এটি অনেকের প্রশ্ন।’ চিকিৎসার নামে তারা কোনো ষড়যন্ত্র করতে গেছেন কি না এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এর আগে ২০১৩ সালের ১৬ জুন থেকে ২৪ জুন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যান বিএনপির চেয়ারপারসন ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। তারও আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির তৎকালীন চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৩ সালের ১০ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে অবস্থান করেন।
বিএনপির মহাসচিবসহ দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের শীর্ষ নেতাদের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার বিষয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দলের নেতারা নিয়মিত সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গেছেন। তাদের কি উন্নত চিকিৎসা করার অধিকার নেই? সুষ্ঠু ভোটের দাবি করা কিংবা গণতান্ত্রিক আন্দোলন ষড়যন্ত্র হবে কেন।’
বিএনপি নেতাদের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যাওয়া ষড়যন্ত্র কি না জানতে চাইলে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘এগুলো খামাখা কথা। তারা গুরুতর অসুস্থ। তাই চিকিৎসা করাতে তারা সিঙ্গাপুর গেছেন। আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত এক মাস আগে সেখানে গেছেন। মহাসচিবও নিয়মিত সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেন। মির্জা আব্বাসও জটিল রোগে ভুগছেন। তিনি চিকিৎসা নিতে সেখানে গেছেন। তাহলে ষড়যন্ত্রের প্রশ্ন আসবে কেন? অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
রাজনৈতিক অঙ্গনে কেউ কেউ মনে করছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজপথের বিরোধী দলের নেতাদের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পেছনে কোনো না কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে থাকতে পারে। কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারি দলের নেতাদের সঙ্গেও সমঝোতার আলোচনা হতে পারে বিদেশের মাটিতে বসেই। আবার কেউ মনে করছেন, রাজপথের আন্দোলনকে জোরালো করতে সংসদের বিরোধী দলের সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে। তবে সরকারি দলের কোনো শীর্ষ নেতা সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন এমন তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
ভোরেরপাতা/এফ