প্রকাশ: রোববার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩, ৫:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ভারতের আসামের নলবাড়ি জেলার দুই নম্বর বর্ধনারা গ্রাম। ফলে-ফসলে এক সময় বেশ সমৃদ্ধই ছিল গ্রামটি। তবে যোগাযোগ ও সড়কের অভাবে ধীরে ধীরে জনশূন্য হতে থাকে বর্ধনারা। ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ১৬ জন মানুষ বসবাস করলেও বর্তমানে একটি পরিবার ছাড়া সবাই গ্রাম ছেড়েছেন।
জেলা শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে গ্রামটি অবস্থিত। বর্তমানে সেখানে বিমল ডেকা, তার স্ত্রী অনিমা এবং তাদের তিন সন্তান নরেন, দিপালী ও সেউতি বসবাস করেন।
দিপালী বলেন, আমাদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে কাছের সড়কে যেতে নৌ ও মেটো পথে দুই কিলোমিটার যেতে হয়। আর বর্ষাকালে আমাদের যাতায়াতের একমাত্র সম্বল নৌকা।
নৌকা চালিয়ে অনিমা সন্তানদের স্কুলে দিয়ে আসেন। এমন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েদের শিক্ষা নিশ্চিত করেছেন তিনি। দিপালী ও নরেন স্নাতক সম্পন্ন করেছেন এবং সেউতি বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়েন।
গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। কেরোসিনের প্রদীপের আলোয় তারা পড়াশোনা করেছেন। বৃষ্টি হলে গ্রামের সব পথ-ঘাট তলিয়ে যায়। তখন নৌকাই তাদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, ১৬২ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই পল্লী গ্রামের অবস্থা এত করুণ ছিল না। কয়েক দশক আগে এই গ্রামে এসেছিলেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুরাম মেধী। তখন তিনি একটি সংযোগ সড়ক উদ্বোধন করেছিলেন।
অনিমা বলেন, স্থানীয়রা গ্রাম ছাড়া শুরু করলে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অবস্থার আরও অবনতি হয়। জেলা পরিষদ, গাঁও পঞ্চায়েত বা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসের মতো স্থানীয় সংস্থা এখানে কোনো উন্নয়ন কাজ করতে আগ্রহী নয়।
সম্প্রতি বর্ধনারা গ্রামে গ্রাম্য বিকাশ মঞ্চ নামে একটি এনজিওর একটি কৃষি খামার স্থাপন করেছে। ফলে এখন পরিবারটি কয়েক জন নতুন মানুষের সঙ্গে কথা-বার্তা বলতে পারে।
এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা পৃথিভূষণ ডেকা বলেন, গ্রামটি এক সময় সমৃদ্ধ ছিল। তবে বারবার বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে বর্তমানে জনশূন্য হয়ে পড়েছে। সরকার যদি একটি সড়ক নির্মাণ করে মৌলিক সুযোগ-সুবিধা দেয় তাহলে এই গ্রামের কৃষি সম্ভাবনা আবারও কাজে লাগানো যাবে। মানুষজন গ্রামে ফিরে আসবে।