আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, গণমাধ্যমে আসেছে, ভারত আমেরিকাকে বার্তা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি গুরুত্ব বুঝে শেখ হাসিনাকে ডিস্টার্ব করা যাবে না। এতে ভারত কি পাপটা করল মির্জা ফখরুল সাহেব? কেন মির্জা ফখরুল সাহেব ভারত বিরুদ্ধে বললেন- ভারত যদি আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির হস্তক্ষেপ করে, তাহলে আমরা সেটা স্বাভাবিক ভাবে নিব না। আসলে আপনারা ( মির্জা ফখরুল) স্বাভাবিক ভাবে কিছুই মানেন না।
তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, ভারত যখন মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সাহায্য করছে, সেটি কি ছিল তাহলে? সেদিন তো ভারতের সেনাবাহিনীর রক্ত ঝড়ছে, জীবন দিয়েছে। তাহলে কি ফখরুল সাহেব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের সুরে বলবেন- ভারতে সেনাবাহিনীরা অনুপ্রবেশ কারী ছিলেন?
শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের আয়োজিত 'আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে' শীর্ষক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আজকে লড়াই চলছে। এই লড়াই যদি জিততে না পারি বাংলাদেশ পাকিস্তানের পরিনত হবে। এই আদর্শিক লড়ায়ে আমাদের জিততে হবে। আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে শেখ হাসিনা। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকে হবে।
১৯৭৫ সালের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মাঝে আনন্দ ছিল। কারণ ১৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আশার কথা ছিল বঙ্গবন্ধুর। কিন্তু ১৪ আগস্ট হটাৎ মধ্যে রাতে গুলি ও কামানের শব্দে পুরো ঢাকা শহর ত্বব্ধ হয়ে গেল। খবর এলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন আওয়ামী লীগের দুর্বলতা, কাপুরুষতার কারণে হত্যার প্রতিবাদ করতে পারি নাই।
তিনি বলেন, জেনারেল জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যা কান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল। তার বড় প্রমান হল হত্যার বিচার করা যাবে না। আইন করলেন। সেই আইনের কারণে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা বিচার চাইতে পারেনি। হত্যাকারীদের দেশ থেকে সহজে চলে যেতে সাহায্য করেন জিয়াউর রহমান। তিনি হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেন। মূলত জিয়াউর রহমান সরাসরি বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জরিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের অত্যাচারের টিমার রোলার চালায় আমাদের উপর। জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করলেন খুনি জিয়াউর রহমান। তার সময় বঙ্গবন্ধু নাম নেয়া পাপ ছিল। এই ইতিহাস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব- উল আলম হানিফ বলেন, পৃথিবীতে অনেক হত্যা কাণ্ড আমরা দেখেছি। কিন্তু একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান সহ তার পুরো পরিবার কে হত্যা করা আমরা দেখিনি। সেদিন কিন্তু বাংলার সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে নাই। তাকে হত্যা করেছে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি। তাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানের আদলে দেশে পরিচালিত করতে চেয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাসের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, পঙ্কজ নাথ এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
ভোরের পাতা/ই