লিগ কাপের ফাইনাল। অসাধারণ দক্ষতায় একটি গোল করলেন লিওনেল মেসি। ম্যাচের সবচেয়ে আবেগঘণ মুহূর্ত যদি এটা হয়, তাহলে টাইব্রেকারকে বলা যাবে সবচেয়ে স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনাকর মুহূর্ত। ক্যারিয়ারে এতটা স্নায়ুর চাপে লিওনেল মেসি নিজেও ভুগেছেন কি না সন্দেহ।
বিশ্বকাপ জয় করেছেন, হাতে উঠেছে কোপা আমেরিকা থেকে শুরু করে ক্লাব পর্যায়ের সব ধরনের শিরোপা। কিন্তু ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসে টাইব্রেকার নামক এতটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির কখনো মুখোমুখি হবেন কি না, তা হয়তো ভাবতেও পারেননি।
দলটির চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান আসরের সর্বোচ্চ ১০ গোল করা আর্জেন্টাইন তারকারই।
রবিবার (২০ আগস্ট) জিওডিস পার্কে লিগস কাপের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে ন্যাশভিল এসসিকে ১০-৯ গোল হারিয়েছে মায়ামি। এর আগে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ড মেসি প্রথমার্ধে মায়ামিকে এগিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ন্যাশভিলকে সমতায় ফেরান ফ্যাব্রিস-জ্যাঁ পিকো।
এবারের লিগস কাপে অংশ নেয় যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার (এমএলএস) ও মেক্সিকোর লিগা এমএক্সের ৪৭টি ক্লাব। প্রায় একমাসব্যাপী প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীর সম্মাননা উঁচিয়ে ধরল মায়ামি। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি এই প্রথম কোনো শিরোপা জিতল।
ফাইনালে ম্যারাথন পেনাল্টি শুটআউটে মায়ামির নায়ক গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার। প্রতিপক্ষের দুটি স্পট-কিক সেভ করেন তিনি। পাশাপাশি নিজেও শট নিয়ে সফলতার সঙ্গে জাল খুঁজে নেন আমেরিকান ফুটবলার।
ম্যাচের ২৩তম মিনিটে নজরকাড়া গোলে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন মেসি। ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে ন্যাশভিলের এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বাঁ পায়ে জোরালো শট নেন তিনি। বল বামদিকের পোস্ট ঘেঁষে ক্রসবারের নিচ দিয়ে জাল কাঁপায়। কিছুই করার ছিল না বিপক্ষে দলের গোলরক্ষক এলিয়ট প্যানিকোর। এই লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মায়ামি।
খেলা ফের চালু হওয়ার পর সমতায় ফিরতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ন্যাশভিলকে। ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে ডি-বক্সে সতীর্থের হেডে বল পেয়ে আরেকটি হেডে লক্ষ্যভেদ করেন পিকো। এরপর দুই ক্লাবই তেতে ওঠে জয়সূচক গোলের জন্য।
৭০তম মিনিটে মায়ামিকে ফের প্রায় এগিয়েই দিয়েছিলেন সাবেক বার্সেলোনা ও পিএসজি তারকা মেসি। কিন্তু তার দূরপাল্লার শটে বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলপোস্ট। তখন হতাশ হলেও টাইব্রেকারে প্রথম শটটি সফলভাবে জালে পাঠান মেসি। এরপর দুই দলের একজন করে খেলোয়াড় স্পট-কিকে ব্যর্থ হন। ফলে নির্ধারিত পাঁচটি করে শট শেষে ৪-৪ ব্যবধানে সমতা থাকে।
এক সময় পেনাল্টি শুটআউটের স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৯-৯। আউটফিল্ডের ফুটবলাররা সবাই শট নিয়ে ফেলায় গোলরক্ষকদের কাঁধে দায়িত্ব পড়ে। সেখানে নিজে জাল কাঁপানোর পর প্যানিকোর স্পট-কিক রুখে দেন ক্যালেন্ডার। এতে ঐতিহাসিক প্রথম শিরোপা নিশ্চিত হয় মায়ামির।
ভোরের পাতা/ই