মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
চকরিয়ায় অস্ত্রধারীদের মিছিলের নেতৃত্বে এমপি জাফর
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: রোববার, ২০ আগস্ট, ২০২৩, ১:৫৫ এএম আপডেট: ২০.০৮.২০২৩ ১:৫৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা ঘিরে সংঘর্ষের সময় অস্ত্রধারীদের মিছিলের নেতৃত্বে দিয়েছেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জাফর আলম। তার সামনে-পেছনে অন্তত দুজনের হাতে ভারী অস্ত্র দেখা গেছে।

ওই দিন সংসদ সদস্য জাফর আলম মাথায় হেলমেট, সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরেছিলেন। ওই সময় ভারী অস্ত্র বহনকারী একজনকে গুলি করতে দেখা যায়। এ ছাড়া তাঁর সঙ্গে থাকা বেশির ভাগ লোকজনের হাতে লাঠি ছিল। শুক্রবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়ানো কয়েকটি ভিডিও ও ছবি পর্যালোচনা করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এসময় ‘চকরিয়ার মাটি, জাফর ভাইয়ের ঘাঁটি, জাফর ভাইয়ের ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ স্লোগান দিয়ে মিছিল থেকে ফাঁকা গুলি করতে দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া তার সঙ্গে থাকা বেশিরভাগ লোকজনের হাতে লাঠি ছিল।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ১৫ আগস্ট বিকেল ৪টার দিকে সাঈদীর গায়েবানা জানাজা ঘিরে যখন চকরিয়া পৌরসভার নামার চিরিংগার বায়তুশ শরফ সড়কে জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুটি গাড়িতে ভাঙচুর চালাচ্ছিলেন। ঠিক ১৫ মিনিটের মধ্যে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ জন লোক নিয়ে সংসদ সদস্য জাফর আলম চকরিয়া শহরে উপস্থিত হন। তার সঙ্গে সশস্ত্র অবস্থায় কয়েকজনকে দেখে মানুষ দিগ্‌বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। এ সময় একটি মিছিল নিয়ে জাফর আলম বায়তুশ শরফ সড়কের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। মিছিলের সামনে ছিলেন একজন অস্ত্রধারী, হাঁটতে হাঁটতে তিনি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। তার ঠিক পেছনে জাফর আলম ও আরেক অস্ত্রধারীকে হেলমেট পরা অবস্থায় দেখা যায়।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পাঞ্জাবি পরা সংসদ সদস্য জাফরকে মাঝখানে রেখে চকরিয়া শহরের মহাসড়কে মিছিলটি হয়। মিছিলের সামনে হেলমেট পরা হাফহাতা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এক ব্যক্তির হাতে ভারী অস্ত্র। এর পেছনে জাফর আলম, তার ব্যক্তিগত সহকারী আমিন চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর ও চকরিয়া পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক জয়নাল হাজারীকে দেখা যায়। জাফর আলম হেলমেট পরলেও আমিন চৌধুরী, আলমগীর ও জয়নাল হাজারীর মাথায় হেলমেট ছিল না। তাদের পাশে কালো পাঞ্জাবি ও হেলমেট পরা আরেকজনকে অস্ত্র হাতে দেখা যায়। মিছিল এগিয়ে যেতে একজনকে অস্ত্র হাতে গুলি করতে দেখা যায়। এ সময় স্লোগান দিতে দেখা যায়, ‘চকরিয়ার মাটি জাফর ভাইয়ের ঘাঁটি, জাফর ভাইয়ের ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাফরের ঘনিষ্ঠ একজন জানান, এমপি জাফর আলম এবারই প্রথম অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামেন এমন নয়। অতীতে বহুবার জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিরোধে নিজেও অস্ত্র হাতে নেমেছেন।

একটি সূত্র বলছে, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে মাঠের শক্তির জানান দিয়ে মনোয়নপ্রত্যাশী বা জাফর বিরোধীদের বার্তা দিতে চাচ্ছে জাফর আলম। মূলত জামায়াত -বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগে জাফর বিরোধীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করায় তার উদ্দ্যেশ্য।

এদিকে বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি খুঁজে খুঁজে ভিডিও ফুটেজ ডিলেট করে দিচ্ছে জাফরের অনুসারীরা। এসময় ভিডিও ফুঁটেজ ভুলেও প্রকাশ পেলে তাদের পরিণাম ভালো হবে না বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।

তবে, এমপি জাফর আলমের বরাত দিয়ে তার একান্ত সহকারী আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরকারি নিষেধ থাকার পরও জামায়াত চকরিয়াকে পরিকল্পিতভাবে অশান্ত করতে চিরিঙ্গা লামারপাড়ায় গায়েবানা নামাজের আয়োজন করে। নামাজ শেষে তারা চকরিয়ায় ব্যাপক ভাঙচুরসহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে এমন গোপন সংবাদ ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। সে মতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুতি নিয়ে রাখে। এমপি সাহেবের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চকরিয়া পৌর শহরে অবস্থান নেয়।

যেখানে ঘটনা হয়েছে সে স্থান থেকে নিজেদের অবস্থান অনেক দূরে দাবি করে আমিন আরও বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের হাতে যেসব অস্ত্রের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো লাঠি, অস্ত্র নয়।

নিহত ফোরকান আওয়ামী লীগের সমর্থক দাবি করে তিনি বলেন, জামায়াত পরিকল্পিতভাবে জল ঘোলা করার জন্য মিথ্যাচার করেছে। আমরাই নিহতের জানাজাসহ সব ধরনের কার্যক্রম করেছি। তার পরিবারকেও নগদ এক লাখ টাকা সাহায্য করেছেন এমপি জাফর আলম। অথচ জামায়াতের কোনো ভূমিকা ছিল না।

জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, এখনো পর্যন্ত আমরা তাদের চিনতে পারি নি। তবে তাদের চিহ্নিত করতে চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুত সময় তাদের শনাক্ত করতে পারবো। কারা গুলি করছে সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অস্ত্রধারীদের সঙ্গে তার ও সংসদ সদস্যের ছবি প্রসঙ্গে চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, তার নেতৃত্বে গায়েবানা জানাজার দিন মহাসড়কে শান্তি মিছিল করা হয়। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন সংসদ সদস্যও। তবে যে ছবিটির কথা বলা হচ্ছে, সে ছবি আর শান্তি মিছিলের ছবি এক নয়। অস্ত্রধারীদের বিষয়টি তিনি জানেন না। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখবেন বলে মন্তব্য করেন।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]