প্রকাশ: শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩, ৯:৪২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সোনাগাজীতে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বখাটের বিরুদ্ধে তিন শিক্ষার্থী পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহতরা হলে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থী সায়মা সুলতানা,ইসরাত জাহান প্রেমা ও তাসলিমা আক্তার শান্তা। অভিযুক্ত বখাটে রবিউল হাসান বগাদানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক। সে ওই ইউনিয়নের ছোট মাঝি বাড়ির হেলাল উদ্দিনের ছেলে। তবে স্থানীয়দের ভাষ্য দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থেকে সরে যাওয়ায় তর্কাতর্কির পর মারধরের ঘটনাটি ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের কাজিরহাট বাজারের পাশে কালিমন্দিরের সামনে ঘটে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী সায়মা সুলতানা বাদি হয়ে শনিবার দুপুরে তিনজনের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হলে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসান ও তার সহযোী মো: তুষার এবং মো: মুরাদ।
অভিযোগ সুত্রে বাদি সায়মা সুলতানা বলেন, গত বৃহস্পতিবার বক্তারমুন্সী কলেজে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা শেষে ডাক বাংলা মধুমেলা নামক মিষ্টি দোকানের ভিতর কিছু খাওয়ার জন্য যাই। সেসময়ে অভিযুৃক্তরা আমাদের পিছু পিছু নিয়ে মিষ্টি দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে। সেখানে তারা আমি সহ আমার বান্ধবীদেরকে উদ্দেশ্যে করিয়া বিভিন্ন কটুক্তি মূলক কথাবার্তা বলিতে থাকে। এক পর্যায়ে রবিউল হাসান আমাকে বলে যে, “তোর ফেইসবুকে আমি ফ্রেন্ড রিকুইষ্ট পাঠাইছি, দ্রুত ফ্রেন্ড রিকুইষ্ট এক্সেপ্ট করবি”। তখন আমি তার অনুরোধে সাড়া না দিলে রবিউল হাসান দোকানদারের সামনে আমার পরিহিত বোরকা ও হিজাব এবং হাতধরে টান মারে। আমি প্রতিবাদ করিলে সে আমাকে লাথি মারে। কিছুক্ষন পর আমি ও আমার বান্ধবীসহ ডাক বাংলা সিএনজি ষ্ট্যান্ড হইতে একটি সিএনজি যোগে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হইলে তারা আমাদেরকে অনুসরণ করিয়া পিছু পিছু আসে। সিএনজি থেকে নেমে দরবেশ ইউনিয়নের কালি বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর দাঁড়াইলে তারা আমাদেরকে দেখিয়া সিএনজি থেকে নামতে বলে। আমি সিএনজি থেকে নামবোনা বলিলে তারা আমার হাত ধরে টানদিয়ে নামিয়ে ফেলে। এসময় তারা আমার অপর দুই বান্ধবীকে টানাটানি করে শ্লীলতাহানি করে। আমরা চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।
তবে স্থানীয়দের ভাষ্য সায়মা সুলতানার সাথে রবিউল হাসানের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। গত কয়েকমাস ধরে রবিউল এলাকায় মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাকে সুপথে ফেরাতে না পেরে সায়মা তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এতেই সে ক্ষিপ্ত হয়ে সায়মাকে মারধর করে। তার বান্ধবিরা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও শ্লীলতাহানি করেন। পরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টাও করে।
এদিকে ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয় সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন মামুন তার নিজ নামীয় ফেসবুক আইডিতে শুক্রবার বিকালে এ বিষয়ে পোষ্ট করেন। ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা রাতই তার উপর হামলার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাংবাদিক মামুন শনিবার বিকালে সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবী তর্কাতর্কি হয়েছে তবে কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। সাংবাদিককে হামলার চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে সে কোন সদুত্তর দেননি।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি হাসান ইমাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি,তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ কাজ করছে।