আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে সাধারণ মানুষ হত্যা করেনি। যারা এই ইতিহাসের জঘন্যতম কাজটি করেছিলো তারা তখন নানা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, আজও নানা পরিচয়ে এই দেশে আছে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে সাধারণ মানুষকে ভালোবাসতেন। তার কন্যা শেখ হাসিনাও সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে আছেন। জনগণের বিপরীতে যাদের অবস্থান তারা শেখ হাসিনাকে জনগণ থেকে আলোদা করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, হচ্ছে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর ফার্মগেট সংলগ্ন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএসআরসি) মিলনায়তনে ‘‘শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে’’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি (বিএইএ)।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সম্পর্কে বেগম মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, ‘মানুষের প্রতি তার যে দরদ, তার যে কমিটমেন্ট তা অসাধারণ। শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা, কৃষি ব্যবস্থা উন্নত করেই ক্ষান্ত হননি, সেখান থেকে কীভাবে আরও উন্নত জীবনমান রচনা করা যায় সেদিক লক্ষ রেখে অবিরত কাজ করে চলেছেন। বছরের শুরুতে বিনামূলে সারাদেশের (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) শিক্ষার্থীদের বই তুলে দেয়া হয়। বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আও কোথাও এমন নজির নাই। ভূমিহীন মানুষকে লাল সবুজের ঘরে (আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে) নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনা যে উদ্যোগ তাও অভূতপূর্ব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যারা নির্বাচন করি এবং এলাকায় মানুষের কাছে যাই তখন লাল সবুজের ঘর থেকে বেরিয়ে মানুষ যে বেহেশতের হাসি দেয় তখন মনে হয় মানুষের মুখে এমন হাসি দেখার জন্যই বোধয় এতদিন রাজনীতি করেছি।’
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আজ যোগযোগ ব্যবস্থা এমন হয়েছে যে প্রত্যন্ত গ্রামেও পাকা রাস্তা। অটো রিক্সা, মোটর সাইকেলে করে নিজ ঘরে মানুষ পৌাঁচাচ্ছেন। ভাইয়ের মোটর সাইকেলে বোন কর্মস্থলে যাচ্ছেন, স্বামীর মোটর সাইলে স্ত্রী যাচ্ছেন। এই যে চিত্র এই চিত্রের স্বপ্নদৃষ্টা ও রচয়িতা শেখ হাসিনা। এখানেই শেষ নয় তিনি বোঝেন এর থেকেও আরও উন্নত চিত্র কীভাবে সৃষ্টি করা যায়। শেখ হাসিনা ছাড়া এই দৃশ্য সৃষ্টির ক্ষমতা এই বাংলাদেশে আর কেউ আছে বলে অন্তত আমি এটা মনে করি না।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে কারা হত্যা করলো, কী কারণে হত্যা করলো তা অনুধাবন করা জরুরী। আমরা এত এত মিথ্যার মধ্যে বাস করি। বঙ্গবন্ধুকে না জানলে, তাকে নির্মোহভাবে অনুধাবন না করলে সেই মিথ্যা থেকে আমাদের মুক্তি ঘটবে না।’ অনেকে মিথ্যাচার করেন বঙ্গবন্ধু নাকি প্রশাসনিকভাবে ব্যর্থ ছিলেন । যদি তাই হতো তাহলে মাত্র ৩ বছর ৭ মাসে মাসে এত কাজ করতে পারতেন না। এতটুকু সময়ে তিনি যা করেছেন তা অকল্পনীয়।
প্রতিমন্ত্রী এসময় বঙ্গবন্ধুর কৃষিভাবনার বেশকিছু উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সদ্য স্বাধীন দেশে অনুভব করেছিলেন কৃষির আধুনিকায়ন দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রকৃত অর্থেই তিনি কৃষির আধুনিকায়ন করেছিলেন।’
আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীবিদ সমিতির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান এমপি সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন। আজ আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে এগিয়ে যাওয়ার শপথ গ্রহণ করি।’
এর আগে বঙ্গবন্ধুর অনন্যতা ও নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন তিনি বক্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক বঙ্গবন্ধু গবেষক, সুভাষ সিংহ রায় বঙ্গবন্ধুর অনালোচিত বিষয় নিয়ে কথা বলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি অর্থনীবিদ সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক মিজানুল হক কাজল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর পনের আগস্টের শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে দোয়া করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান।
ভোরের পাতা/কে