প্রকাশ: শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩, ৫:২২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
দীর্ঘ ২ বছরের অধ্যবসায়ের পর সহপাঠীরা যখন ব্যস্ত পরীক্ষা দিতে তখন এভাবেই বুকফাটা আর্তনাদের মাধ্যমে নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা জানাচ্ছিলেন রাশেদুল ইসলাম। নিয়মিত ক্লাস ও কলেজের সব পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন সে জানতে পারে তার সঙ্গে ভর্তি জালিয়াতি করেছে কলেজের অফিস সহকারী। অথচ তিনি ধাপে ধাপে বিভিন্ন ফিস বাবদ ২ বছরে দিয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
জানা যায়, রাশেদুলের মতো মিলন, হাবীবা ও শারমিনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে অনলাইনে আবেদন করে ভর্তির সুযোগ পায়নি। পরে অফলাইনে ভর্তি করানোর প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেন কলেজের কর্মচারীরা। নিয়মিত ক্লাসেও অংশ নেন তারা। কিন্তু পরীক্ষার আগে আর প্রবেশপত্র পায়নি পরীক্ষার্থীরা। তারা জানতে পারে ভর্তি প্রক্রিয়াটাই ছিল ভুয়া।
শেষ সময়ে এসে প্রতারণার এমন ফাঁদ বুঝতে পেরে এখন সন্তানদের ভবিষ্যতের শঙ্কায় অভিভাবকেরাও। এ ঘটনার পরপরই কলেজে মাস্টাররোলে অফিস সহায়ক অভিযুক্ত হারুন গা ঢাকা দিলেও পরে কলেজ প্রশাসনের চাপে পাওয়া যায় তাকে। এমন প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের পরও উল্টো ক্যামেরার সামনেই তিনি উত্তেজিত হন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ওপর।
আরেক অভিযুক্ত অফিস সহায়ক হান্নান একজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও তিনিও দায় চাপান এই প্রতারণা চক্রের মূলহোতা হারুনের ওপর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, এর সঙ্গে জড়িত কলেজের প্রধান সহকারী। তবে তিনি এসবের দায় নিতে নারাজ।
এদিকে ঘটনা জানাজানির পর এমন প্রতারনার বিচার চেয়ে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ করে কলেজ ছাত্রলীগ। এসময় অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন ছাত্রনেতারা। অন্যদিকে কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. রেজাউন নবী বলেন, রসিদ ছাপিয়ে এমন প্রতারনা করতে পারে কর্মচারীরা, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের দাবি, ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ইতোমধ্যে তারা লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষকে। আর অনুরোধ জানিয়েছেন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষার গ্রহণের সুযোগদানের।
ভোরেরপাতা/এফ