চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্রিটেনের জ্বালানি নিরাপত্তা মন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস মহাকাশ, প্রযুক্তি এবং জরুরি খনিজের মতো খাতে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে সৌদি আরব সরকারের সাথে আলোচনা করেছেন।
ব্রিটেনের সরকার পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা জিসিসি’র সাথে বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে উপসাগরীয় দেশগুলোর সমর্থন আদায়েরও চেষ্টা করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি সম্প্রতি কাতার, কুয়েত এবং জর্দান সফর করেছেন।
রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরতার অবসান ঘটাতে উপসাগরীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত বছর সৌদি রাজধানী রিয়াদে গিয়ে যুবরাজ মোহাম্মদের সাথে দেখা করেন।
ঐ বৈঠকে তিনি গত সেপ্টেম্বরে রানি এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার একটি আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এবং তার জায়গায় অন্য একজন সিনিয়র সৌদি কর্মকর্তাকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার হয়।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান শেষবার ব্রিটেনে গিয়েছিলেন ২০১৮ সালের মার্চ মাসে, খাশোগজি হত্যা ছ’মাস আগে।
তখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন টেরিজা মে। সফরকালে সৌদি যুবরাজ রানির সাথে লাঞ্চ এবং তৎকালীন প্রিন্স অফ ওয়েলস ও ডিউক অফ কেমব্রিজের সাথে ডিনার করেন।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল রপ্তানিকারক দেশের কার্যত শাসনকর্তা। রক্ষণশীল উপসাগরীয় ঐ রাজ্যে মহিলাদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়াসহ বেশ কিছু সংস্কার কাজের জন্য তিনি পশ্চিমা নেতাদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
তবে জামাল খাশোগজি হত্যার কারণে তার আন্তর্জাতিক খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দু’হাজার আঠারো সালে ২রা অক্টোবর জামাল খাসোগজি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই মোহাম্মদ বিন সালমানের ভূমিকা নিয়ে নানা সন্দেহ তৈরি হয়।
সে সময় সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলতে বাধ্য হন যে জামাল খাসোগজি নিখোঁজের সাথে সৌদি আরব সরকার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের 'কঠোর শাস্তি' পেতে হবে।
এর জবাবে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বলেছিলেন, তারাও এর পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত। বৈশ্বিক তেলের বাজারে সৌদি আরবের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
সৌদি রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের ক্রমাগত প্রচারণার কারণে সে দেশের অনেক মানুষ এখনও সরকারকে সমর্থন দিচ্ছেন। সে দেশে এমন গুঞ্জনও তৈরি করা হয়েছিল যে সৌদি আরবের নির্দোষ রাজতন্ত্রের বদনাম ঘটানোর লক্ষ্যেই ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে কাতার এবং তুরস্ক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ঐ ঘটনা ঘটিয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা