প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩, ১১:২০ পিএম আপডেট: ১৭.০৮.২০২৩ ১১:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) মারধর এবং হল থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সৈকত রায়।
সৈকত রায় বলেন, বুধবার (১৬ আগস্ট) রাত আনুমানিক ১২টার দিকে মুজতবা আলী হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে আমাদের গ্রুপের নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্তের অনুসারীরা আসেন। তারা একটি বিষয় নিয়ে কক্ষে থাকা মেহেদী হাসানের সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং মারধর শুরু করেন। এ সময় ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত দরজা আটকানোর চেষ্টা করলে আমি বাধা দেই। এতে আমাকেও মারধর করা হয়। মার খেয়ে বাইরে গিয়ে প্রভোস্টকে কল দেওয়ার সময় গ্রুপের নেতা সীমান্তের সঙ্গে দেখা হয়। তখন তিনি আমাকে বলেন, ‘কই যাস? কাকে কল দিচ্ছস?’ তখন তিনি আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নেন এবং আবার রুমে নিয়ে মারধর করেন। মারধর শেষে তারা আমার বিছানা নিচ তলায় হল গেটে নামিয়ে দেন এবং মা-বাবার নাম ধরে গালিগালাজ করেন। রাত ২টার দিকে মোবাইল ফেরত দেওয়ার সময় আজিজুল ইসলাম সীমান্ত বলেন, ‘তোর ভাগ্য ভালো জানে মারিনি। এসব যদি প্রশাসনের কাছে যায় তাহলে তোকে মেরে ফেলবো।’
হল থেকে বের করে দেওয়া অন্য শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে আমাকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গত ১৫ আগস্ট আমার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করি। পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের গ্রুপের নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্ত পোস্ট মুছে ফেলতে বললে তা মুছে ফেলি। পরদিন ১৬ আগস্ট রাত ১২টার দিকে সীমান্তের নির্দেশে তার অনুসারীরা রুমে এসে আমাকে বের হওয়ার জন্য বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নাকি আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলেছে। এ সময় আমি তাদের বলি, হল থেকে যদি বের হতে হয় তবে সকালে কোনো এক স্যারের সঙ্গে আলাপ করে বের হবো। তখন তারা তর্কে জড়ান এবং মারধর শুরু করেন। হল থেকে বের করে দিলে প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলি। এ সময় আমাদের ১২১ নম্বর কক্ষে থাকতে বলা হয় এবং সকালে বিষয়টি মীমাংসা হবে বলে জানান।
তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে গ্রুপ নেতা এবং ইংরেজি বিভাগ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম সীমান্ত বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাতে সিনিয়র-জুনিয়র ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে শুনে ঘটনাস্থলে যাই এবং মীমাংসা করে হল প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রশাসন এ বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান দেবে।
সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট মোহাম্মদ আবু সাঈদ আরফিন খান বলেন, বিষয়টি উপাচার্যকে জানানোর পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।